গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও গীতিকবিদের দুঃখ

আমাদের বাবার মতো গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাবাও সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এটাই স্বাভাবিক-সঙ্গত ও বাঙালি জীবনের শাশ্বত বৈশিষ্ট্য। উপরন্তু সন্তান যদি ছেড়ে দেয় একইসঙ্গে সম্মানজনক ও অর্থোপার্জনের বিস্তর সুযোগ থাকার নিশ্চিত পেশা সংলগ্ন লেখাপড়া। এবং সেসবকে শিঁকেয় তুলে রেখে সৃজনশীল কাজে-বিশেষ করে গান লেখাকে যখন বেছে নেয় ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে, তখন একজন বাবা কতোটা চিন্তাগ্রস্ত হন, তা শুধু এমন দশাগ্রস্ত একজন বাবার পক্ষেই অনুভব ও উপলব্ধি করা সম্ভব। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাবার মধ্যেও আমরা দেখেছি একজন সন্তান স্নেহে অন্ধ বাবার অব্যক্ত দুঃখ-কষ্ট ও চাপা ক্ষোভের উপস্থিতি। গান লেখার নেশায় তিনি যখন ছাড়তে চলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের লেখাপড়া। তখন বাবা এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন, 'ইউ আর মাই লস্ট গেম'।

বাবার এই বেদনা ও দীর্ঘশ্বাসকে সঙ্গী করেই গান লেখায় নিজেকে উৎসর্গ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। গানই হয়ে ওঠে তার জীবনের ধ্যান-জ্ঞান ও সাধনা। গান দিয়েই তিনি জয় করেছেন বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয়। লিখেছেন আক্ষরিক অর্থেই অজস্র গান। বাংলা ভাষায়তো বটেই পৃথিবীর অন্যকোনো ভাষাতেও একজনের পক্ষে এই পরিমাণ গান লেখা হয়েছে বলে তার কোনো প্রমাণ নেই। কমপক্ষে বিশ হাজার, মতান্তরে একুশ হাজার গানের স্রষ্টা তিনি। ১৯৬৪ সালে গান লেখা শুরু, তারপর আর দাড়ি পড়েনি এই সাধনায়। তখন বাংলা গানের স্রষ্টা হিসেবে খ্যাতির মধ্যগগণে অবস্থান করছেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল। একটা নাটকের গান লেখার কথা ছিল উনারই। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে লিখে উঠতে পারেননি।

নাটকের পরিচালকের কাছে অনুমতি নিয়ে রচনা করেন ওই গানটি। রিপ্লেসমেন্ট রচয়িতা হিসেবে যার শুরু, সময় পরিক্রমায় তিনিই হয়ে ওঠেন বাংলা গানের অপ্রতিদ্বন্দ্বী এক রচয়িতা। শুধু কি তাই? এমন একটা সময় আসে যখন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের সকল শিল্পীই গীতিকার হিসেবে তাকে সবার ওপরে রাখতেন। কারণ, তার বেশীরভাগই অসম্ভব জনপ্রিয় হতো। ফলে, দিনে একটা দুটো নয় তারও অধিক গান রচনা করতেন। এভাবেই গানের সংখ্যা পৌঁছে যায় বিশ-একুশ হাজারের কোঠায়।

গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন তার বড়ো প্রমাণ বিবিসি বাংলার জরিপে সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে উনার লেখা তিনটি গান সেই তালিকায় স্থান পাওয়া। তালিকায় স্থান পাওয়া প্রথম গানটা ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।' বঙ্গভঙ্গের কালে রচিত এই গানটি পরবর্তীতে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃত হয়। দ্বিতীয় হয় ভূপেন হাজারিকার 'মানুষ মানুষের জন্য' গান। আবদুল গাফফার চৌধুরীর 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গানটি হয় তৃতীয়।  শ্রেষ্ঠ ২০টি গানের মধ্যে তিনজনের দুটি করে লেখা গান স্থান পায় ওই তালিকায়।
কাজী নজরুল ইসলামের লেখা- 'কারার ওই লৌহকপাট', এবং 'চল চল চল ঊর্ধ্ব গগণে'। গোবিন্দ হালদারের লেখা- 'এক সাগর রক্তের বিনিময়ে', 'মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি'। গৌরিপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা- 'কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই', 'মুছে যাওয়া দিনগুলো আমায় যে পিছুডাকে'। এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম হল গাজী মাজহারুল আনোয়ার, যার লেখা তিনটা গান ওই তালিকায় জায়গা করে নেয়। এগুলো হল- 'জয় বাংলা বাংলার জয়', 'একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়', 'একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল'।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রযোজক-পরিচালক-কাহিনীকার পরিচয়েও ছিলেন খ্যাতিমান।  এক্ষেত্রেও তিনি পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রকৃতার্থে সফল ও সার্থক হয়েছিলেন সঙ্গীত রচয়িতা পরিচয়ে। জীবনে যা কিছু অর্জিত হয়েছে তার প্রত্যক্ষে ও পরোক্ষে প্রভাব রেখেছে সঙ্গীত প্রতিভা। প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। ফিরে যাই বাবার প্রসঙ্গে। বাবা তখনও বেঁচে। কালজয়ী অনেক গানের রচয়িতা হিসেবে তিনি যেমন জনপ্রিয় তেমনই নন্দিত-প্রশংসিত ও সর্বজনে সম্মানীয়। একুশে পদক পাওয়ার পরপরই বাবা একটা চিঠি লিখেছিলেন তাকে। বলেছিলেন, 'আমি তোকে চিঠি লিখে যে কথাটি বলেছিলাম, সেটা সঠিক নয়। যার যা পথ সেটাই সত্যি হয়।'।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাবার কথা পুনরাবৃত্তি করে বলতে হয়, ' যার যা পথ সেটাই সত্যি হয়।'। সত্যি হয়েছিল একজন গান রচয়িতার পথও, কিন্তু এই সত্যি কোনোরকমে ঠেলেঠুলে নয়। কেননা সত্যের সেই পথে সবাই সফল হতে পারে না, কেউ কেউ হয়। আবার যারা সফল হয়, তাদের সবাই সার্থক হতে পারে না, কেউ কেউ হয়। সেই কেউ কেউদের অন্যতম একজন গাজী মাজহারুল আনোয়ার যিনি জন্মেছিলেন ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি, চিরপ্রয়াণের পথে পাড়ি দেন ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২এ। ৭৯ বছরের জীবনকে তিনি যেভাবে রাঙায়িত করেছেন তা কম জনই পেরেছেন। পেয়েছেন সঙ্গীতের জন্য জারি থাকা সকল সম্মাননা পদক ও পুরস্কার। আমাদের দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দুই আমলেই তিনি পেয়েছেন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা। কিন্তু বেদনার বিষয় হলো, তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাননি।

যারা গীতিকার-বাংলা একাডেমি কি তাদেরকে কবি বলে মনে করেন না? গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মতো একজন সঙ্গীত প্রতিভাকে আমরা কি আমাদের কোনো স্তরের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি? দিয়েছি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি? তার কোনোপ্রকার পরিচিতি ঘটানো সম্ভব হয়েছে আমাদের মাধ্যমিক কিংবা উচ্চশিক্ষায়। পারিনি। এটা যে আমাদের কতো বড়ো ব্যর্থতা ও লজ্জার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতেও যদি আমরা সেটা উপলব্ধি করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতেও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ যে মূলত গান সেই কথা কি আমরা বিস্মৃত হয়েছি? রবীন্দ্রনাথ যে 'গীতাঞ্জলী'র জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন-সেটা তো মূলত গানেরই সংকলন ছিল। বব ডিলানকে যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হল সেটাও তার গীতিকবি প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবেই। বাংলা একাডেমি যদি ফি-বছর একজন কবিকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দিতে পারেন এমনকি একজন শিশু সাহিত্যিক কিংবা একজন ছড়াকারকেও, তাহলে গীতিকবির জন্য তারা কোনো উদার মনের পরিচয় দিতে পারছেন না।

বাংলা একাডেমি আমাদের মহান একুশের চেতনার ফসল। যে একুশের সমার্থক হয়ে উঠেছে একুশে ফেব্রুয়ারির অমর গান 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।' যে একুশের চেতনায় জনমানসে ছড়িয়ে দিতে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন যারা তাদের মধ্যে গীতিকবিরা হলেন অন্যতম। এক্ষেত্রে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারি কবিয়াল রমেশ শীলের কথা। সুতরাং বাংলা একাডেমির উচিৎ গীতিকবিদের সম্মান প্রদানে ফিবছর পুরস্কার প্রবর্তন নীতিমালায় পরিবর্তন ঘটানো।

নাটক যেমন কেবলই মঞ্চস্থ হওয়ার জন্য নয়, রয়েছে তার পাঠ উপযোগিতাও, এবং সেটা হচ্ছেও। গানও ঠিক তাই। কেবল তা সুর করে গীত হওয়ার জন্য নয়, তারও রয়েছে পাঠ উপযোগিতা। 'গীতবিতান' পাঠ করে আমরা কি তার ঐশ্বর্য অন্বেষণ করি না? সকল গানেরই পাঠ উপযোগিতা রয়েছে, বাণীপ্রধান গানের ক্ষেত্রে হয়তো কিছুটা বেশি। আবৃত্তি ছাড়া কি আমরা কবিতার রস আস্বাদন করি না, তাহলে গানকে কোনো আমরা কেবলই সুরের আশ্রয়ে গীত হওয়ার মধ্যে তার আবেদনকে সীমাবদ্ধ করে রাখব, যৌক্তিকতা কোথায়?

আমাদের বৌদ্ধিক স্থানসমূহে যারা নেতৃত্ব দেন-যারা বড়ো বড়ো পদ ও পদবি আঁকড়ে আছেন তারা এতোটাই মান্ধাতা চিন্তায় নিবিষ্ট ও সীমাবদ্ধ যে নতুন কিছু ভাবতে ও গ্রহণে তারা বড়ো বেশি অপারগ এবং এই না পারাটার মধ্যে তারা জারি রাখতে চান তাদের কৃতিত্ব। একারণেই লালন আমাদের পাঠ্যক্রমে জায়গা পায় না। অথচ বাঙালির নবজাগরণের ক্ষেত্রে লালনের অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয় ও মর্যাদার দাবিদার, যদি তা আজও রয়েছে উপেক্ষিত ও অচর্চিত।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের চিরপ্রয়াণের লগ্নে আমরা যদি সদর্থক অর্থেই এসবের প্রতি মনোযোগী হই এবং এই সব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠে নূতনের সূচনা করতে পারি-তাহলে সেটাই  হবে তার প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শনের নিদর্শন।

সাংস্কৃতিক কর্মে এবং বৌদ্ধিকতার সৃজন ও মননে যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের সকলের জন্য অস্বস্তি ও বিড়ম্বনার জায়গা হলো এই জগতে যারা রয়েছেন তারা সকলেই রাজনৈতিক দলভুক্ত হয়ে পড়ছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। অথচ এই দুইয়ের মধ্যে একটা ব্যবধান ও দূরত্ব থাকা উভয়ের জন্যই কল্যাণকর-দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জরুরিও বটে। এটা রাজনীতিবিদদের যেমন বোঝা উচিৎ তেমনি গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করা প্রয়োজন সাংস্কৃতিককর্মী ও বৌদ্ধিকতায় যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের সকলেরই। রাজনীতি সচেতনতা আর রাজনৈতিককর্মী বা নেতা হওয়া কিন্তু এক নয়। উভয়ে-উভয়ে লীন হয়ে নয়, পৃথক অবস্থান থেকে যদি স্ব- স্ব ভূমিকা পালন করেন তাহলে তাতে দেশ ও জাতির উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, এক হয়ে গেলে অন্যের ভূমিকা থেকে বঞ্চিত হয়।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা গানের দিকে যদি আমরা লক্ষ্য করি, তাহলে দেখব সেখানে দেশপ্রেম কতোভাবে-কতোরূপে হাজির হয়েছে। তার গানে, মুক্তিযুদ্ধ, নিসর্গ-প্রকৃতি, মানব সম্পর্ক নানানভাবে জারি রয়েছে তবে সবকিছুর উপরে ছিল দেশপ্রেমের স্থান। দেশের প্রতি ভালবাসা ছিল তার কাছে সবার ওপরে। জীবনভর গানে গানে তিনি যে সাধন করেছেন তা মূলত দেশেরই বন্দনা। একারণেই আর সবাইকে ছাড়িয়ে তার তিনটা গান বিবিসির তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। জয় বাংলা-বাংলার জয় গানটা তিনি লিখেছিলেন ৭১'র মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার ঢের আগে ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোতে। এবং উনার গানকে উপজীব্য করেই 'জয় বাংলা' চলচিত্রে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

মাজহারুল আনোয়ার বাংলাকে-বাংলাদেশকে এমনভাবে ভালবেসেছিলেন যে কলম ধরলেই এর প্রকৃতি-পরিবেশ মানুষ-ইতিহাস-ঐতিহ্য তার কলমে এসে ধরা দিত। আর তিনি যেহেতু এর ভেতরে ডুব দিয়েছিলেন কোনোপ্রকার শর্তা ছাড়া। একারণে একজন প্রকৃত ডুবুরির মতোই ডুব দিয়েই তিনি সাগর সেঁচে মানিক কুড়িয়ে আনতেন। তার প্রতিটি গান ছিল মানিক তুল্য। এই মানিককে ভালবাসতে কোনোপ্রকার কুণ্ঠা বা কসুর করেনি বাংলা ভাষাভাষিরা। ফলে তার সৃষ্টি মানেই জনপ্রিয়তার চূড়ান্ত মাত্রা ছুঁয়ে যাওয়া। শুধু আমাদের কালেই নয় কয়েকটি প্রজন্মকে তিনি গান দিয়ে তার অনুরাগী শ্রোতায় পরিগণিত করেছেন। একেই বুঝি বলে ঈর্ষণীয় প্রতিভা।

বাংলা কবিতায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাইরে গিয়ে জীবনানন্দ দাশ যেমনি ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভার স্বীকৃতি পেয়েছেন। শুদ্ধতম কবির শিরোপা পেয়েছেন। বাংলা গানেও রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাইরে গিয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ার স্বাতন্ত্রিক ও বিস্ময়কর এক প্রতিভা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এক্ষণে এটাও বলে রাখা প্রয়োজন যে, আমরা এসবের মধ্য দিয়ে এমনতর কথা বলছিনা যে, বাংলা কবিতার পঞ্চ কবি, জসীম উদ্দীন, সমর সেন, শামসুর রাহমান প্রমুখ কবিরা বড়ো নয়। কিন্তু বাংলা কবিতার সকল কবিদের মাঝেও জীবনানন্দ দাশ কতোটা স্বতান্ত্রিক প্রতিভায় নিজেকে উদ্ভাসিত করেছেন তা সময় পরিক্রমায় ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে-ভবিষ্যতে আরও হবে। একইভাবে আমরা মনে করি, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল ছাড়াও অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, গৌরিপ্রসন্ন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ সঙ্গীত রচয়িতাও অনেক বড়ো প্রতিভা। কিন্ত গাজী মাজহারুল আনোয়ার বাংলা গানের একজন জীবনানন্দ। 

যিনি সমসাময়িক বলে আমরা তাকে আবিষ্কার করে উঠতে পারিনি। সময় যতো গড়াবে, জীবনানন্দর মতো তিনিও ততো বেশি উন্মোচিত হবেন। কিন্তু তার আগে প্রয়োজন আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর খাসলত বদলানো এবং সকল সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃতি বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা পালন।  কেবল এটা করতে পারলেই গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রতি জানানো হবে প্রকৃত শ্রদ্ধা ও সম্মান। মনে রাখতে হবে এই দেশটাকে ঘিরে তার বাসনা ও সাধনা ছিল, 'বাংলা আমার আমি যে তার/ আর তো চাওয়া নাই রে…/ আরতো চাওয়া নেই … বাংলার আমার সুখে দুঃখে/ হয় যেন গো ঠাই রে/ হয় যেন গো ঠাই।' বাংলাকে ঘিরে আমাদের সকলের স্বপ্নও কি তার সমান ও সমান্তরাল?

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

7h ago