Skip to main content
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩  //  বুধবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
দেশে শীতের অনুভূতি থাকবে আরও ৪-৫ দিন: আবহাওয়া অধিদপ্তর ১টি ভাপা পিঠার দাম ২-৫ হাজার টাকা! ‘ভালো আছি’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচন: ভোটারের জন্য অপেক্ষা ১৮ ঘণ্টায়ও নেভেনি মোংলা ইপিজেডের ‘ভিআইপি ব্যাগ’ কারখানার আগুন নির্মাণ শেষ না হতেই হেলে পড়েছে পায়রা বন্দরের সীমানা দেয়াল তেজগাঁওয়ে সড়কে অসুস্থ হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ‘জনগণের টাকা লুট করতেই সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে’  মাথা থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার প্রকৃত কারণ যা জানা গেল ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট চলছে, প্রার্থী ‘নিখোঁজে’ নজর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বিভাগের ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এরশাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও বিদ্রোহ করে নির্বাচনে অংশ নিই: মুজিবুল হক ‘আইএমএফের ঋণ অনুমোদন প্রমাণ করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত’
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
দেশে শীতের অনুভূতি থাকবে আরও ৪-৫ দিন: আবহাওয়া অধিদপ্তর ১টি ভাপা পিঠার দাম ২-৫ হাজার টাকা! ‘ভালো আছি’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচন: ভোটারের জন্য অপেক্ষা ১৮ ঘণ্টায়ও নেভেনি মোংলা ইপিজেডের ‘ভিআইপি ব্যাগ’ কারখানার আগুন নির্মাণ শেষ না হতেই হেলে পড়েছে পায়রা বন্দরের সীমানা দেয়াল তেজগাঁওয়ে সড়কে অসুস্থ হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ‘জনগণের টাকা লুট করতেই সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে’  মাথা থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার প্রকৃত কারণ যা জানা গেল ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট চলছে, প্রার্থী ‘নিখোঁজে’ নজর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বিভাগের ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এরশাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও বিদ্রোহ করে নির্বাচনে অংশ নিই: মুজিবুল হক ‘আইএমএফের ঋণ অনুমোদন প্রমাণ করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত’
The Daily Star Bangla
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
সাহিত্য

সাতচল্লিশ পশ্চিমবঙ্গ-পূর্ববঙ্গ পার্থক্যটাকে অনতিক্রম্য করে দিয়েছিল

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
সোমবার, নভেম্বর ৭, ২০২২ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন

শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরিটাস অধ্যাপক। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। বহু আগে শ্রেণিকক্ষ থেকে অবসর নিলেও বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রকৃত উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র করে তোলার জন্য তার ভাবনা ও কর্মে কখনো ছেদ পড়েনি। একাধিকবার উপাচার্য হওয়ার প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। মনোযোগী হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত জ্ঞান উৎপাদন ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য।

সমাজ-রূপান্তর অধ্যায়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে গত ৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে অধ্যাপক আহমদ কবির প্রথম স্মারক বক্তৃতা দেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তৃতার বিষয় ছিল 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ: বিচারের দুই নিরিখে'।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর এই স্মারক বক্তৃতার কথাগুলো ৭ পর্বে প্রকাশিত হচ্ছে দ্য ডেইলি স্টার বাংলায়। আজ প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় পর্ব।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য ভূমিকাটা দাঁড়িয়ে গিয়েছিল শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গের অনগ্রসর সমাজকে এগিয়ে যেতে সাহায্য প্রদান করা। শিক্ষা সব সময়েই সংস্কৃতি ও সামাজিকতার সঙ্গে যুক্ত; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলাতে দায়িত্বটা ছিল বিশেষ ধরনের। একেতো পূর্ববঙ্গের সমাজ ছিল পিছিয়ে-পড়া; তদুপরি উচ্চশিক্ষার জন্য এই অঞ্চলে এটিই ছিল প্রথম বড় ও একক প্রতিষ্ঠান।

পূর্ববঙ্গের অগ্রগতি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য মাত্রাতে ঘটতো যদি হিন্দু ও মুসলিম সমাজ একসঙ্গে চলতে পারতো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপারগতার কারণে নয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে। দু'পা সমান তালে চলে নি; আর্থ-সামাজিক পার্থক্য অবশ্যই ছিল, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সে পার্থক্য যেভাবে বিরোধ ও সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে তাতে অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছে বৈকি।

প্রথমে সমাবর্তনের ওই অনুষ্ঠানে রক্ষণশীল গভর্নর লর্ড লিটন আরও একটি সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। তাঁর ভাষায়, 'Let the University take a lead [...] and try to evolve the Dacca man-a type that shall be conspicuous both in learning and in politics.' (Dhaka University : The Convocation Speeches, vol. I, compiled by Serajul Islam Choudhury, Dhaka Bishwabidyalay Prokashona, Sangstha, Dhaka, 1988, p 31)

তাঁর এই আশাটা যে পূর্ণ হয়নি তা বলা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্বতার প্রমাণ দিতে পেরেছে বৈকি- শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন তেমনি রাজনীতিতেও। কিন্তু শিক্ষার্থীদের রাজনীতিটা লর্ড লিটন যে ধারায় এগুবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন সেই রাস্তা ধরে এগোয়নি। তারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে পারদর্শিতা প্রদান করেনি; তদ্বিপরীতে ধর্মনিরপেক্ষতাকে পুষ্ট করেছে। ওদিকে লিটন যে শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন তা নয়। পুলিশ বাহিনীর বার্ষিক অধিবেশনে তিনি ভারতীয় নারীদের সম্পর্কে একটি অসম্মানজনক মন্তব্য করেছিলেন; যার প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা হলের ছাত্ররা বার্ষিক সমাবর্তনে তাঁর হাত থেকে ডিগ্রির সনদ নিতে অসম্মতি জানায়, এবং সমাবর্তন বর্জন করে। (ধীরেন্দ্রলাল দাশ, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি', আমাদের সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাগুক্ত, পৃ ১৩৫)

সম্মিলিত Dacca Man তৈরীর সম্ভাবনা বরং সেদিনের ওই প্রতিবাদের মধ্যে দেখা দিয়েছিল; যেমন দেখা দিয়েছিল হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামকে বরণ করে নিয়েছিল সে-ঘটনার মধ্যেও। নজরুল এসেছিলেন মুসলিম হলে অনুষ্ঠেয় মুসলিম সাহিত্য সমাজের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা হলের বসবাসকারীদের সকলেই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। সেই হলেও তাঁর ডাক পড়েছিল। উদ্যোগটা নিয়েছিল ঢাকা হলের ছাত্রসংসদ। উৎসাহ জুগিয়েছিলেন হলের প্রভোস্ট বিজ্ঞানী জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ। পরিকল্পনাটি ছিল হলের মিলনায়তনে একটি গানের আসর বসবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন ধীরেন্দ্রলাল দাশ। তাঁর বিবরণে ওই অনুষ্ঠানে সেদিন যা ঘটেছিল তা এই রকমের-  'Lytton হলে আসর বসল, তিল ধারণের ঠাঁই নাই। বাংলা গজল গানের পর শুরু হলো অগ্নিস্রাবী দেশাত্মবোধক গানের পালা, মুখবন্ধ অবশ্যই 'বিদ্রোহী' কবিতার আবৃত্তি। একটার পর একটা গান গেয়ে চলেছেন, তাঁর উচ্চারিত আবেগে সমগ্র সভা কেঁপে কেঁপে উঠছে। 'শেকল পরা ছল মোদের শেকল পরা ছল', এই গানটা ক্ষণিকের জন্য এমন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল, মনে হচ্ছিল এই মুহূর্তেই সব ছেড়ে ছুড়ে বেরিয়ে পড়ি। অত্যাচারী শাসকদের শৃঙ্খল চূর্ণবিচূর্ণ করে দেই।' (ধীরেন্দ্রলাল দাশ, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি', আমাদের সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাগুক্ত, পৃ ১৩৫)

অসাম্প্রদায়িকতার ওই বোধের প্রকাশের ভিন্নতর ও পরিপূরক ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা হল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত কর্মকর্তা সুবোধ রায় জানাচ্ছেন- 'একবার ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীকে কার্জন হলে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। আমরা একদল ছাত্রছাত্রী প্রত্যক্ষভাবে তার বিরোধিতা করি। বিরোধিতার কারণ জানিয়ে আমরা অনুষ্ঠানে ছাপানো ইস্তেহার প্রচার করি।' (সুবোধ রায়, 'আমাদের দিনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়', প্রাগুক্ত, পৃ ২৩৯)

শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী তখন হিন্দু মহাসভার সভাপতি। কিন্তু তার সম্বর্ধনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে নয়, ঢাকা হল থেকেই যে এসেছিল সেটা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। নজরুলের অসাম্প্রদায়িক ধারাটা সামনে এগুতে পারছে না, হিন্দু মহাসভা এসে প্রতিবন্ধক তৈরী করছে, এটি বাংলা ও বাঙালীর জন্য ছিল এক অভিশাপ, যার পরিণতি ঘটেছে ১৯৪৭-এর মর্মান্তিক দেশভাগে। হিন্দু মুসলিমদের ঐক্য গড়ায় সচেষ্ট সুভাষ বসু কিন্তু তখন অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাঁর সমর্থকরা ঢাকা শহরে ছিলেন, ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও।

দেশভাগ যে কতটা ক্ষতিকর হয়েছিল তার আলোচনা আমরা অন্যত্র পাই, পাই উপরোল্লিখিত আমাদের সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্কলনটিতেও। ১৯৪৭-এ প্রথম দিককার শিক্ষকদের কারো কারো অবসর গ্রহণের সময় ঘনিয়ে এসেছিল; কেউ কেউ আগেই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেশভাগ বাংলাকে ভিন্ন ভিন্ন দু'টি রাষ্ট্রের অংশ করে দিল। সীমান্তে পাহারা বসলো, এলো পাসপোর্ট ও ভিসা; দুই রাষ্ট্রের ভেতর যাতায়াতই যে শুধু কঠিন হয়ে পড়ল তাই নয়, পারস্পরিক বৈরিতাও দেখা গেল। শিক্ষকরা চলে যেতে শুরু করলেন। ছাত্রছাত্রীদেরও বড় একটা অংশ দেশত্যাগ করলো। বিশ্ববিদ্যালয় আর আগের মতো রইলো না। ঢাকা ছেড়ে যাঁরা চলে গিয়েছিলেন তাঁদের সকলের স্মৃতিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত জীবন্ত; কিন্তু সে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জন্য ক্রমশ স্মৃতির বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। দু'য়েকজন এমন কথাও বলেছেন যে সাতচল্লিশে তাঁদের প্রিয় ও চেনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু ঘটেছে; পরের বিশ্ববিদ্যালয় অন্য এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আগেরটি নয়।

হ্যাঁ, এটা ঠিক যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে এগুচ্ছিল সেভাবে এগুতে পারেনি। ইতিহাসের ধারাবাহিকতার ছেদ ঘটেছে, ঐতিহ্যের সঠিক সম্প্রসারণ ঘটেনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানা পেশায় এবং বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন; গৌরব অর্জন করেছেন, নিজেদের জন্য তো অবশ্যই, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এবং দেশের জন্যও। শিক্ষক, আইনজীবী, বিজ্ঞানী, রাজনীতিক, গবেষক হিসেবে তাঁরা পূর্ববঙ্গে তো অবশ্যই, পশ্চিমবঙ্গে এবং ভারতের নানা প্রদেশে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ব্রাহ্মণ্যবাদী মহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উদারতার সঙ্গে গ্রহণ করতে না-পারার মনোভাবটা রয়েই গেছে। দৃষ্টান্ত দেয়া যাক। বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু'কে কে না চেনেন, এবং অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষক হিসেবে অসাধারণ ছিলেন অমিয় দাশগুপ্তও। প্রফেসর দাসগুপ্ত এক সময়ে ঢাকা ছেড়ে চলে যান। শেষ জীবনটা তাঁর কেটেছে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ তাঁকে চিনতে চায় নি। উপেক্ষাই করেছে। অমিয় দাশগুপ্তের প্রতিভাবান ছাত্রদের একজন ছিলেন অশোক মিত্র, একসময়ে যিনি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী শাসনামলে দীর্ঘকাল অত্যন্ত সফল অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন; তিনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন, 'একজন দু'জন পণ্ডিতপ্রবর এমনও দাবী করেছেন, প্রেসিডেন্সি কলেজই বাংলা, বাংলাই প্রেসিডেন্সি কলেজ। ইত্যকার দাবী আসলে একধরনের কূপমণ্ডূকতা, পৃথিবীকে জানবার চেনবার বোঝবার জন্মগত অক্ষমতা। মাত্র ক'দিন আগে এক বাংলা দৈনিকের রবিবাসরীয় বিভাগে 'মানুষ গড়বার কারিগর' শিরোনামে এক মস্ত প্রবন্ধ ফাঁদা হয়েছিল। [...] শিক্ষকদের তালিকায় সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রায় অনুল্লেখিত, অনুচ্চারিত অমিয় দাশগুপ্ত মশাইয়ের নামও। সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রায় পঁচিশ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন; তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রতিভার স্ফূরণ ও বিকিরণ ঢাকাতেই। ১৯৪৫ সালের পরে অবশ্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে এসেছিলেন বছর পাঁচ-ছয়ের জন্য, তারপর শান্তিনিকেতনে, জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে বৃত হওয়া, রাজ্যসভার সদস্য হওয়া। কিন্তু হলে কী হয়, সেই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে একবার জাত খুইয়েছিলেন, তা আর পুনর্জয় করতে পারলেন না। কলকাতার বিজ্ঞজনের কাছে তাঁর স্থান মেঘনাদ সাহার অনেকটাই নীচে।'

অশোক মিত্র আরও লক্ষ্য করেছেন যে, 'অমিয় দাশগুপ্তের ললাটলিখন [...] শোকাবহ। পশ্চিম বাংলায় ক্বচিৎ-কদাচিৎ একজন দু'জন পণ্ডিত মানুষ ব্যতিরেকে বিশেষ কেউই তাঁর নাম উচ্চারণ করেন না। এমনকি শান্তিনিকেতনে, যেখানে তিনি জীবনের শেষ বারো-চৌদ্দ বছর কাটিয়েছেন এবং সেখানে থাকাকালীনই নিভৃতে নিজের মতো করে অন্তত তিনটি তত্ত্বভিত্তিক গ্রন্থ রচনা করেছেন, সে-সব গ্রন্থ বিদেশে প্রকাশিত ও সংবর্ধিত হয়েছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নিথর ডোবায় তাঁর কোনো অনুকম্পন অনুভূত হয় নি।' অশোক মিত্র মনে করেন, 'তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ অর্থনীতির শিক্ষক আজ পর্যন্ত ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেন নি।' (অশোক মিত্র, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উজ্জ্বল স্মৃতি', শতবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত, ঢাকা ইউনিভার্সিটি এ্যালামনাই এসোসিয়েশন, ঢাকা ২০২২, পৃ ৬৮-৬৯)

পশ্চিমবঙ্গে-পূর্ববঙ্গে ব্যবধান, ঘটিতে-বাঙ্গালে দ্বন্দ্ব, অবস্থানগত কারণে পূর্বের ব্যাপারে পশ্চিমের উন্নাসিকতা, এসব অবশ্য পুরানো ইতিহাস, তবে সাতচল্লিশ এসে সেই পার্থক্যটাকে আরও গভীর ও অনতিক্রম্য করে দিয়েছিল।

Related topic
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী / ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় / অধ্যাপক আহমদ কবির প্রথম স্মারক বক্তৃতা / দ্বিতীয় পর্ব
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

৭ মাস আগে | বাংলাদেশ

মা ছিলেন বাস্তববাদী, মায়ের অনেক গুণ পেয়েছি: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

১ মাস আগে | রাজনীতি

‘আপনারা ঢাকা দখল করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব?’

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
৬ মাস আগে | সাহিত্য

রাষ্ট্র বদল হয়েছে, ঔপনিবেশিকতা বদল হয় নাই

প্রধানমন্ত্রী
২ মাস আগে | বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বহু আন্দোলনের সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রধানমন্ত্রী

উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প
৩ দিন আগে | তারুণ্য

এক উচ্চশিক্ষিত দম্পতির উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প

The Daily Star  | English
IMF loan
3h ago|Bangladesh

IMF $4.7B Loan: Programme to nurse economy to health

The International Monetary Fund’s $4.7 billion loan programme won’t be a miracle worker for the Bangladesh economy.

2h ago|Economy

Small industries up the creek

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2023 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.