বছরে ১৮ টন দুধ উৎপাদনে সক্ষম ‘সুপার কাউ’ ক্লোন করলেন চীনের বিজ্ঞানীরা

হোলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের বাছুরকে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হোলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের বাছুরকে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

চীনের বিজ্ঞানীরা সাফল্যের সঙ্গে ৩টি দুধেল গাভীর ক্লোন করতে পেরেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, এই গাভীগুলো অস্বাভাবিক মাত্রায় দুধ উৎপাদনে সক্ষম।

গতকাল বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম নিনজিয়া ডেইলি আরও জানায়, এটি দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য শিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং গরু আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাবে।

নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও বনায়ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের বিজ্ঞানীরা এই উদ্যোগের তদারকি করেন।

নেদারল্যান্ডস এর উন্নত হোলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু থেকে এই ৩ বাছুরকে ক্লোন করা হয়। চন্দ্র বছর শুরুর ঠিক ১ দিন আগে, ২২ জানুয়ারি এই বাছুরগুলো জন্ম নেয়। নেদারল্যান্ডের এই গরুগুলো বছরে ১৮ টন এবং সম্পূর্ণ জীবদ্দশায় মোট ১০০ টন দুধ উৎপাদন করতে পারে।

মার্কিন কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এসব 'সুপার কাউ' যুক্তরাষ্ট্রের গড়পড়তা গাভীর চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি দুধ উৎপাদন করতে পারে।

নিনজিয়ার উলিন শহরের এক কর্মকর্তা জানান, ৩০ ডিসেম্বর প্রথম ক্লোন করা গরুটি সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৫৬ কেজি ৭০০ গ্রাম (১২০ পাউন্ড)।

হোলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের পূর্ণবয়স্ক গরু। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হোলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের পূর্ণবয়স্ক গরু। ফাইল ছবি: রয়টার্স

দ্য টেকনোলজি ডেইলি জানায়, বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের গরুর কানের কোষ থেকে ১২০টি ভ্রূণ সংগ্রহ করে সেগুলোকে সারোগেট গাভীর জরায়ুতে স্থাপন করেন।

প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিং সুপার কাউ এর জন্মের ঘটনাকে যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেন। তার মতে, চীন সবচেয়ে সেরা জাতের গরুগুলোকে এখন থেকে আরও সাশ্রয়ী উপায়ে সংরক্ষণ করতে পারবে।

চিনে প্রতি ১০ হাজার গরুর মাঝে শুধু ৫টি গরু তাদের জীবদ্দশায় ১০০ টন দুধ উৎপাদন করতে পারে। এই গরুগুলো নতুন বাছুর জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। তবে এ ধরনের অনেক গরু চিহ্নিত করতে করতে তাদের অনেক বয়স হয়ে যায়। যার ফলে, তাদের থেকে বাছুর প্রজনন করা সম্ভব হয় না। ক্লোনিং এ সমস্যার উপযুক্ত সমাধান হতে পারে।

চীনের দুধেল গাভীর ৭০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি হয়।

প্রকল্প প্রধান জিন বলেন, 'আমরা ২-৩ বছরে ১ হাজার সুপার কাউয়ের একটি পাল প্রস্তুত করতে চাই। এটি চীনের বিদেশী দুধেল গাভীর ওপর নির্ভরতা কমানো এবং সরবরাহ সঙ্কট মোকাবিলার জন্য একটি বলিষ্ঠ অবকাঠামো হবে'। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন প্রাণীদের ক্লোনিংইয়ে বিশেষ উন্নতি করেছে।

গতবছর চীনের একটি ক্লোনিং প্রতিষ্ঠান বিশ্বের প্রথম মেরু নেকড়ে শাবক ক্লোন করে। 

২০১৭ সালে উচ্চ পর্যায়ের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন বাছুর জন্মের দাবি জানায় চীনের বিজ্ঞানীরা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Not satisfied at all, Fakhrul says after meeting Yunus

"The chief adviser said he wants to hold the election between December and June"

11m ago