‘বৈষম্যমূলক' নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
গতকাল বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। এই ঘোষণার পর থেকে ভারতের কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর হওয়া এই আইন 'মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক' বলে সমালোচনা রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা আসার পর ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুতে সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ দেখা দেয়। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত বা অন্য কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এ আইনের অধীনে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া অনিবন্ধিত অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই ২০১৯ সালে লোকসভায় আইনটি পাস হওয়ার চার বছর পর নরেন্দ্র মোদির সরকার গতকাল সোমবার সিএএ বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে অনিবন্ধিত হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু মুসলিমরা এর আওতায় পড়ছে না।
তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইতে বিক্ষোভকারীরা মোমবাতি মিছিল বের করে এই আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
আসামে বিক্ষোভকারীরা এই আইনের কপি পুড়িয়ে ফেলে এবং এর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। আজ এই আইনের প্রতিবাদে স্থানীয় বিরোধীদলগুলো পুরো রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
কেরালা রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া আজ সেখানে দিনভর বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, 'কেরালা এই সাম্প্রদায়িক ও বিভেদসৃষ্টিকারী আইনের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ থাকবে।'
কেন্দ্রীয় রাজধানী নয়াদিল্লিতে কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে সতর্ক রয়েছে। ২০১৯ সালে নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল।
সিএএ আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোদি সরকার বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করবে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন 'নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর অধীনে যোগ্য অভিবাসীরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।'
সমালোচকদের দাবি, এমন আইন প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুল বার্তা দেবে।
Comments