তাইওয়ানের ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়াল, নিহত অন্তত ৯

দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত হুয়ালিয়েন পার্বত্য এলাকায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। সকালে মানুষ যখন স্কুল ও অফিসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই এই ভূমিকম্প শুরু হয়।
তাইওয়ানে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে এই ভবনটি হেলে পড়ে। ছবি: রয়টার্স
তাইওয়ানে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে এই ভবনটি হেলে পড়ে। ছবি: রয়টার্স

পূর্ব এশিয়ায় স্বঘোষিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা অন্তত ৯, যা গতকালের পর আর বাড়েনি।

আজ বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, মহাসড়কে আটকে পড়া হোটেলকর্মীদের বেশিরভাগকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দ্বীপটি প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে। গত ২৫ বছরে তাইওয়ানে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প।

দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত হুয়ালিয়েন পার্বত্য এলাকায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। সকালে মানুষ যখন স্কুল ও অফিসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই এই ভূমিকম্প শুরু হয়।

রাজধানী তাইপেতেও বাড়িঘড় প্রবলভাবে কেঁপে ওঠে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বললেই চলে।

ধসে পড়া ভবনে উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ছবি: রয়টার্স
ধসে পড়া ভবনে উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ছবি: রয়টার্স

তাইওয়ানের দমকল বিভাগ জানিয়েছে, আহতের সংখ্যা এক হাজার ৫০ এ পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন ৫২ জন মানুষ। তারা আরও জানায়, তারোকো ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশে রওনা হওয়া ৫০ হোটেল কর্মীর মধ্যে ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

হোটেলকর্মীরা দুই দ্বীপের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী মহাসড়কের এক অংশে আটকা পড়েছিলেন বলে জানায় দমকল বিভাগ।

দমকল বিভাগ হোটেল কর্মীদের একটি ড্রোন ফুটেজ প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কর্মীরা সড়কের এক পাশ থেকে হাত নেড়ে উদ্ধারকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। সেখানে একটি বিধ্বস্ত মিনিবাসের পেছনের অংশও দেখা গেছে।

অপর এক অবস্থান থেকে ২৬ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে দমকল বিভাগ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে একটি খনিতে আটকে পড়া ছয় ব্যক্তিকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।

খনিতে আটকে পড়া কর্মীদের ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবি। ছবি: রয়টার্স
খনিতে আটকে পড়া কর্মীদের ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবি। ছবি: রয়টার্স

হুয়ালিয়েন শহরের বিভিন্ন ভবনে আটকে পড়া মানুষদের সবাইকেই উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দমকল বিভাগ।

গতকাল রাতভর ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন হয়। প্রায় ৩০০টি কম্পনের কারণে এ অঞ্চলের অনেক বাসিন্দা ঘরের বাইরে রাত কাটান।

ইউ নামের ৫২ বছর বয়সী এক নারী এএফপিকে জানান, তিনি বুধবার রাত থেকে একটি অস্থায়ী তাঁবুতে পরিবারকে নিয়ে বসবাস করছেন, কারণ তিনি তার নিজের অ্যাপার্টমেন্টে থাকার সাহস পাচ্ছে না। তিনি সার্বিক পরিস্থিতিকে 'এলোমেলো' বলে বর্ণনা করেন।

ভূমিকম্প আক্রান্তদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়। ছবি: রয়টার্স
ভূমিকম্প আক্রান্তদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়। ছবি: রয়টার্স

'ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনগুলো ভয়ঙ্কর। বিরতিহীনভাবে তা চলছে। আমি ঘরে ঘুমানোর সাহস পাচ্ছি না', যোগ করেন তিনি।

হুয়ালিয়েন কাউন্টিকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

Comments