৮ কারণে করতোয়ায় নৌকাডুবি: জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন

পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে আউলিয়ার ঘাটে ১০৫ জন যাত্রী নিয়ে এই নৌকাটি ডুবে গিয়েছিল। ছবি: স্টার

পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ৮টি কারণ চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তদন্ত প্রতিবেদনে ৫টি সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে যায়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে এবং নিখোঁজ আছেন ৩ জন। ঘটনার দিনই পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়। রোববার রাতে কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তদন্তে দুর্ঘটনার যেসব কারণ উঠে এসেছে তার মধ্যে আছে ইজারাদারের শর্ত ভঙ্গ করা ও অবহেলা, মাঝিদের অদক্ষতা, ত্রুটিপূর্ণ নৌকা ব্যবহার এবং মহালয়া উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় ফুরিয়ে আসায় পূণ্যার্থীদের ব্যাকুলতা। নিষেধ করার পরও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নৌকায় উঠেছিলেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা প্রশাসন ছাড়াও আলাদাভাবে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস তদন্ত করছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। তাদের অধিকাংশই মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই মন্দিরে যাচ্ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ৪৭ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ১০ ফুট প্রস্থের নৌকাটিতে মোট ১০৫ জন যাত্রী উঠেছিলেন। নৌকাডুবির পর সাঁতরে পাড়ে ওঠেন ৬ জন, জীবিত উদ্ধার হয় ২৭ জন, ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার হয় এবং এখনো ৩ জন নিখোঁজ আছেন। নৌকাটিতে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী নেওয়ার সক্ষমতা ছিল।

ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে নৌকাটি যাত্রা শুরু করার কয়েক মিনিট পরে মাঝনদীতে গিয়ে এর ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। আবার ইঞ্জিন চালু করতেই নৌকাটি দুলতে থাকে। নৌকাটি কাত হয়ে গেলে এক পাশে পানি উঠতে শুরু করে। একপর্যায়ে নৌকাটি উল্টে ডুবে যায়।

নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ তিন জন হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার জয়া রানী (৪), দেবীগঞ্জের ভূপেন্দ্র নাথ বর্মণ (৪২) এবং বোদা উপজেলার সুরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৫)।

ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় একটি টহল দল উদ্ধারকাজ করছেন।

ঘটনার পর থেকে জেলা পরিষদের কাছ থেকে নয় লাখ টাকার চুক্তিতে আউলিয়ার ঘাট ইজারা নেওয়া আব্দুল জব্বার পলাতক আছেন বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Will resign if govt interferes in election process: CEC

He has issued a stern warning against any kind of irregularity ahead of the polls

1h ago