ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের হামলা, পালাতে গিয়ে নিহত ৩

ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের উপর আরেক গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলা থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত পালানোর সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের ৩ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের আরেক নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
বাম থেকে মুরাদ বিশ্বাস, তৌহিদ ও সমরেশ। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলা থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত পালানোর সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের ৩ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের আরেক নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন— ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি মুরাদ বিশ্বাস, ছাত্রলীগ কর্মী ও ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থী তৌহিদ ও সমরেশ হোসেন ছমির।

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা সড়কের আঠারো মাইল নামক স্থানে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

ওই ঘটনায় ভেটেরিনারি কলেজের জিএস সজিবকে কুপিয়ে জখম করেছে ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপের সদস্যরা।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের জিএস সজিব আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা রাতে ৩টি মোটরসাইকেলে করে একসঙ্গে শহর থেকে কলেজে ফিরছিলাম। এমন সময় আমাকে মারার জন্য ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়। আমার ঘাড়ে কোপ দেওয়ার সময় আমি মোটরসাইকেল থেকে পুকুরে লাফ দেই। পরে আমাকে না পেয়ে ভিপি মুরাদ এর গাড়ি লক্ষ্য হামলা করতে গেলে মুরাদসহ মোটরসাইকেলে থাকা ৩ জন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায়।'

শিক্ষার্থীরা জানায়, সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম আহমেদের সঙ্গে বর্তমান জিএস সজীবের বিরোধ চলছে। এরই জের ধরে মুরাদ ও সজীবসহ আরও কয়েকজন শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে জোহান পার্কে সামনে পৌঁছালে প্রতিপক্ষরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এতে সজিবসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। তাদের হামলা থেকে বাঁচতে ভিপি মুরাদসহ ৩ জন মোটরসাইকেলে পালানোর চেষ্টা করেন।

জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপপরিচালক মো. শামীমুল ইসলাম জানান, নিহতদের মাথায় আঘাত লেগেছে। মোটরসাইকেল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ধাওয়া ও হামলায় প্রথমে সজিব আহত হন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর মুরাদ বিশ্বাসসহ ৩ জনকে ধাওয়া করলে হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে তারা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তৌফিক হাসান জানান, নিহত ৩ জনের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। এছাড়া হামলায় আহত সজিবের বাম হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে।

Comments