রুমায় ১২ পরিবারের ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় ২ নম্বর রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম রিখ্যাইং পাড়ায় (ঠান্ডা ঝিরি) অগ্নিকাণ্ডে ১২টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে ১২টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, পাড়ার সামংউ মার্মার (৫৬) বাড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আগুনের বিষয়ে জানতে চাইলে সামংউ মারমার স্ত্রী মেমাহ মারমা (৫৩) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি দুপুরে রান্নাঘরে খাবার রান্না করছিলাম, হঠাৎ সোলার ব্যাটারি থেকে বিকট শব্দ শুনতে পাই। তখন আমি দৌঁড়ে গিয়ে দেখি ব্যাটারি থেকে দাউদ দাউদ করে আগুন চলছে এবং মুহূর্তের মধ্যে ঘরের চাল পর্যন্ত আগুন জ্বলে উঠেছে। আমি সব কিছু ফেলে চিৎকার করতে করতে বাড়ির বাইরে চলে আসি।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাড়ার কারবারি প্রুসাঅং মার্মার।
প্রুসাঅং মারমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমাদের বাড়িতে বাব-দাদার সময়কাল থেকে জমা রাখা সোনা, রূপার গয়না সব কিছু পুড়ে গেছে। কিছুই বের করতে পারিনি। সব পুড়ে গেছে। এমন কি জুমের ফসল, ধান, তিল, দলীলপত্রসহ ঘরের মধ্যে যা আছে সব পুড়ে গেছে।
উশেচিং মার্মা (২২) নামে একজন দোকান মালিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া ঘরসহ আমার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকানে ২০ হাজার টাকার মালামাল ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিল।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ, স্কুল-কলেজের সার্টিফিকেট, জমির দলিলসহ সরকারি-বেসরকারি প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র পুড়ে গেছে।
রুমা উপজেলার ২ নম্বর রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈবং মারমা দ্য ডেইলিস্টারকে বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ১২টি পরিবারের জন্য ১০০ কেজি চাল, ডাল, লবণ, সবজি, শুটকি ও নাপ্পি দেওয়া হয়েছে।'
উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রশিক্ষক ফাহিম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকটি পরিবারের কাছে ১০কেজি চাল, ১ লিটার তেল, লবণ, ডাল, চিনি, ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।'
Comments