কেরানীগঞ্জে রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণ

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে ৪ বছরের রোজামনি

রোজামনি। ছবি: সংগৃহীত

৩ দিন ধরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে ৪ বছরের শিশু রোজামনি।

গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর কেরানীগঞ্জের গদারবাগে রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রোজামনির শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়।

একই আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন রোজামনির বাবা সোহাগ হোসেন (২৫), মা মিনা বেগম (২২), দেড় বছরের বোন তৈয়বা আক্তার, খালা জেসমিন আক্তার (৩৫) ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া চাচাতো বোন তিশা আক্তার।

আগুনে মেয়েটির দাদা-দাদিসহ আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রোজা গুরুতর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছে। তাকে ইনস্টিটিউটের সপ্তম তলায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রোজার দাদা ফরহাদ হোসেন জনি জানান, দুর্ঘটনার পর তার ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মধ্যে এখন কেবল রোজাই জীবিত আছে। তিনি বলেন, 'শিশুটিকে অন্তত ৩ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করছি। আমরা আশা হারাতে চাই না।'

এ ঘটনার পর শিশুটির দাদী মাকসুদা বেগম শোকে প্রায় উন্মাদ হয়ে গেছেন বলে জানান ফরহাদ হোসেন। বলেন, 'সে ৩ দিনে একবারও হাসপাতাল ছেড়ে যায়নি।' রোজা তাদের বাবা-মায়ের প্রিয় সন্তান ছিল। আগুন লাগার পর তার বাবা সোহাগ প্রথমে তাকে উদ্ধার করে। তবে ততক্ষণে তার শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায়। তাকে প্রতিবেশীর কোলে রেখে সোহাগ আবার তার স্ত্রী, মেয়ে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের উদ্ধার করতে যায়।'

আগুনে শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া সোহাগ এই বার্ন ইনস্টিটিউটেই চিকৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ফরহাদ হোসেন জানান, সোহাগ শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রোজার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিয়েছিল।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ জানান, রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গুদামের মালিক টুটুল হাজির বিরুদ্ধে গাফিলতি ও সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন।

আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়ির মালিক মো. হারুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মামলা করার জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তারা তাতে রাজি হননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

8h ago