তিস্তার চরে আমনের বাম্পার ফলন

আমন
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় চর গোবর্ধানে আমন খেত। ১৫ অক্টোবর ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়

এ বছর বন্যার প্রকোপ তুলনামূলক কম থাকায় তিস্তার বুকে শতাধিক চরে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। খুশি চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চরের অনেক কৃষক খেত থেকে আমন ধান কেটে ঘরে তুলছেন। অনেকে ধান কাটছেন।

আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে চরের আমন ধান কাটা শেষ হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চর গোবর্ধানের কৃষক আজিজার রহমান (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। ২ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির ধান কাটবো।'

তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৭ মণ ধানের ফলন পেয়েছেন। গত বছরও ৬ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। বন্যার কারণে প্রায় ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছিল।

'এ বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় চরের জমি থেকে আমন ধানের আশানুরূপ ফলন পেয়েছি। পরিবারের সবাই খুশি,' যোগ করেন তিনি।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর পারুলিয়ার কৃষক মনসুর আলী (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর বন্যায় আমনের ক্ষতি হয়নি। ৭ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। আশা করছি, ১২৫-১৩০ মণ ফলন পাবো।'

'গত বছর একই জমি থেকে ৫৫ মণ ধানের ফলন পেয়েছিলাম' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'প্রতি বিঘা জমিতে আমন চাষে খরচ হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। বাম্পার ফলনে খুশি। বন্যার কবলে তেমন পড়িনি।'

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চর গতিয়াশ্যামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৬২) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ৮ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। গত বছর ১২ বিঘায় আমন চাষ করেছিলাম। সে বছর বন্যায় আমনের ক্ষতি হওয়ায় এ বছর কম জমিতে চাষ করেছি। তবে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে।'

তিনি জানান, ৮ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছেন। প্রতি বিঘায় গড়ে ১৯ মণ ধান পেয়েছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্র ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে—লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় ১১৫ কিলোমিটার তিস্তার বুকে ১২০টির বেশি চর আছে। এর প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি আবাদি। এর এক চতুর্থাংশ জমিতে আমন চাষ হয়েছে।

এ বছর তিস্তার চর এলাকায় প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিস্তার চরাঞ্চলে আমন ধানসহ নানান ধরনের সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা আমনের আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় খুব খুশি।'

'চরাঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলন খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কৃষি বিভাগ চরাঞ্চলে কৃষকদের ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে দিকনির্দেশনাসহ সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করে থাকে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
NBR speeds up auction process of abandoned goods

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

1h ago