চলন্ত বাসে ডাকাতি-সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ৬ জন রিমান্ডে, ৪ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ডাকাতদলের সন্দেহভাজন ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন টাঙ্গাইলের একটি আদালত।
টাঙ্গাইলে ডাকাতির কবলে পড়া বাসটি। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ডাকাতদলের সন্দেহভাজন ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন টাঙ্গাইলের একটি আদালত।

তারা হলেন রতন হোসেন (২১), সোহাগ মণ্ডল (২০), খন্দকার হাসমত আলী ওরফে দিপু (২৩), বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস (২১), মো. জীবন (২১) এবং আব্দুল মান্নান (২২)।

অপর চার জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন। তারা হলেন- মো. আলাউদ্দিন (২৪), রাসেল তালুকদার (৩২), আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান (৩২) এবং নাঈম সরকার মুন্না (১৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার ১০ জনকে বিকেলে আদালতে উপস্থাপন করলে ৬ জনের ৭ দিন করে রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাত তাদের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি বলেন, 'বাকি ৪ জনের মধ্যে আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হানকে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাতের আদালতে, রাসেল তালুকদারকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দর আদালতে, মো. আলাউদ্দিনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালতে এবং নাঈম সরকার মুন্নাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে।'

এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় র‌্যাব তাদের টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন।

গত ৩ আগস্ট কুষ্টিয়া থেকে নারায়নগঞ্জগামী ঈগল এক্সপ্রেসের একটি চলন্ত বাসে ডাকাতি করে ১৩ জন। বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, অন্যান্য মালামাল লুট এবং এক নারীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তারা।

ঘটনার দিনই হেকমত আলী নামে একজন বাসযাত্রী বাদি হয়ে মধুপুর থানায় ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাতের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি এবং ধর্ষণ মামলা করেন।

ঘটনার একদিন পর টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর একটি দল টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রাজা মিয়া নামে এক সন্দেহভাজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়। 

পরেরদিন মামলাটির তদন্তভার মধুপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেনের কাছ থেকে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

সেদিনই নতুন তদন্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল পাশ্ববর্তী গাজীপুরে জেলার কালিয়াকৈর থেকে ডাকাত দলের সন্দেহভাজন আরও দুই সদস্য মো. আউয়াল (৩০) এবং মো. নুরুন্নবীকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। 

পরদিন এই ৩ জন সন্দেহভাজন ডাকাত টাঙ্গাইলের পৃথক দুটি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর আদলত তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

৭ আগস্ট ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে বাস ডাকাতির ঘটনার সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী টাঙ্গাইলের মধুপুরের রতন হোসেনসহ ডাকাতদলের সন্দেহভাজন মোট ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

Comments