ফেরদৌস হত্যা মামলা: র‍্যাব বলছে ২ আসামি গ্রেপ্তার, পুলিশ বলছে ১

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক ফেরদৌস (২২) হত্যা মামলায় দুই সহোদরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে র‌্যাব-১১। তবে এই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক ফেরদৌস (২২) হত্যা মামলায় দুই সহোদরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে র‌্যাব-১১। তবে এই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, অন্যজনের মামলায়  'সম্পৃক্ততা' না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কান্দিপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে গলাকাটা অবস্থায় ফেরদৌসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা একই ইউনিয়নের শুভকরদি জাহাঙ্গীরনগর এলাকার নজরুল ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, ঘটনার পর গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর ভোরে বন্দরের মদনগঞ্জ থেকে 'মূল হত্যাকারী' আসামি মো. রকিব (২০) ও সন্দিগ্ধ হিসেবে তার বড়ভাই মো. রাজিবকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১। তারা বন্দর উপজেলার বুরুন্দি পশ্চিমপাড়ার মো. শামসুদ্দিনের ছেলে।

র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মুনিরুল আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, 'আসামি রকিব তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিবলুর সাথে একটি অটো (ব্যাটারিচালিত রিকশা) চুরির পরিকল্পনা করে। ভিকটিম (ফেরদৌস) যে গ্যারেজে তার অটো রাখে সেই গ্যারেজে আসামি রকিব সহকারী হিসাবে কাজ করে। ঘটনার দিন রকিব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে নিয়ে তার অটোতে করে ঘটনাস্থলে যায় এবং অপর পলাতক আসামি সিবলু তার সহযোগীদের নিয়ে রকিবের সাথে যোগ দেয়। ভিকটিমকে অন্যান্যদের সহায়তায় গলা কেটে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রকিব ওই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।'

ফেরদৌস হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অপর এক সন্দিগ্ধ আসামি রাজিবকে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

র‌্যাব থানা পুলিশের কাছে দুই জনকে হস্তান্তর করলেও একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা। পুলিশ বলছে, ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত রকিবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে ছুরিটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই মামলায় বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মোহসীনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন রকিব।

জানতে চাইলে ওসি দীপক চন্দ্র সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আসামি দুই জন না, আসামি একজন। তারা (র‌্যাব) সন্দিগ্ধ হিসেবে দুই জনকে ধরে দিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত রকিব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেখানো মতে যেখান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়ে তার পাশে লুকিয়ে রাখা চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যজন আসামি না। হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সম্পৃক্ত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

ঘটনার মূল আসামি গ্রেপ্তার হলেও ছিনতাই হওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশাটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি। রিকশাটি উদ্ধার ও অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা পুলিশ করছে বলে জানান ওসি দীপক চন্দ্র সাহা।

জানতে চাইলে নিহতের চাচা নৌকার মাঝি মো. মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনার দিন রাতেই অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আমরা তো জানি র‌্যাব দুই জনকে গ্রেপ্তার করছে। নিউজও হইছে এইটা নিয়া। থানাতেও তো দুই জনরে দেখছি। পুলিশ একজনরে ছাড়বো কেন?

এই বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মুনিরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ফেরদৌস হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে দুই জনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সে অনুযায়ী গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তিও পাঠানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago