ফরিদপুরে বিএনপির ২৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
ফরিদপুরে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি দায়ের করেছে পুলিশ। ওই মামলায় বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাসহ মোট ২৪ জনকে এজেহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে আরও ৭০-৮০ জনকে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় এ মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রায়হান কবির নাঈম বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন।
মামলায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে পরস্পরের যোগসাজশে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দান, ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আছেন- ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এফ এম কাইয়ুম (৬০), জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন (৫০) ও জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন (৫৫), জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েশ (৩২)।
মামলার এজেহার থেকে জানা গেছে, এজাহারে নাম উল্লেখ থাকা ও গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জন রাজবাড়ীর বাসিন্দা। তারা বিএনপি কর্মী। তারা হলেন- মো. কামরুজ্জামান (৪০), আব্দুল হাই মণ্ডল (৫৫), মো. মিলন মণ্ডল (৩০), মো. জাহিদুল ভূঁইয়া (৪৫), মো. মোমিন শেখ (৪৫), মো. সাজাহান (৩৮), মো. শিপন ইসলাম (২০), মো. গণি মোল্লা (৪৬), মাহাবুব চৌধুরী দুলাল (৬৭), মো. শাহীনুর রহমান (৩৪), মো. সৌরভ শেখ (১৮) ও মো. আজাহার আলী (৩৫)।
তবে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির মধ্যে জেলা বিএনপির কিংবা ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগের অধীনে অন্যান্য জেলার বিএনপির পদধারী কোনো নেতা নেই বলে জানা গেছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশাসন অম্বিকা ময়দানে গণঅবস্থানের জন্য অনুমতি দিয়েছিল এবং আমাদের আইনি সহায়তা করার কথা। অথচ প্রশাসনের সামনে আমাদের সামনে এসে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ বোমা ফাটায়, ঢিল ছোড়ে- কিন্তু পুলিশ কিছু বলে না। আমাদের ছেলেরা তাদের প্রতিহত করল, পুলিশ তখন আমাদের ছেলেদের গুলি করল ও গ্রেপ্তার করল। আবার পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিল। পুলিশের এই বহুরূপী চরিত্র গণতন্ত্রের পথে বাধা। পুলিশের ভূমিকা আজ জনগণের সামনে প্রকাশ পেয়েছে।'
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, 'ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে, এ হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের শনাক্ত করে নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। কাউকে হয়রানি করতে মামলা করা হয়নি। ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। ১৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, গত বুধবার অম্বিকা ময়দানে বিএনপির ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগের উদ্যোগে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগ হামলা করে। পরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফলে বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
Comments