যৌতুকের জন্য ১৭তম স্ত্রীকে হত্যা: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, ১৮তম স্ত্রী খালাস
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে রংপুরের পীরগঞ্জে স্বামী আবু সাঈদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক এম আলী আহমেদ। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন তিনি।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, আবু সাঈদ তার ১৭তম স্ত্রী তানজিনা খাতুনকে বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। ওই সময় ১০ হাজার টাকা দেন তানজিনার বাবা। বাকি ১৫ হাজার টাকার দাবিতে তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যা করেন সাঈদ।
আসামি আবু সাঈদ ও তার ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগম পলাতক রয়েছেন।
তাদের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালত তাছকিরা বেগমকে খালাস দিয়েছেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জের অনন্তরামপুর গ্রামের তানজিনার সঙ্গে পালগঢ় গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে আবু সাঈদের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে আবু সাঈদ তাছকিরা বেগমকে বিয়ে করেন।
২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ১৫ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে আবু সাঈদ (তৎকালীন বয়স ৪২) তার নববিবাহিত স্ত্রী তাছকিরার (তৎকালীন বয়স ২০) সহযোগিতায় তানজিনাকে (তৎকালীন বয়স ৩২) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পার্শ্ববর্তী ধান খেতে ফেলে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন তানজিনার বাবা তাজিম উদ্দিন।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক। ৩০ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
২০১০ সালের ২৬ জুলাই জামিন পেয়ে কিছুদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পলাতক আবু সাঈদ। তাছকিরা বেগম ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে ২০১৪ সালের ১৮ মে থেকে পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাজিবুর রহমান লাইজু জানান, 'আবু সাঈদ যৌতুকের লোভে একের পর এক বিয়ে করছিলেন। তানজিনাকে বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুকের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দেন তার বাবা। বাকি ১৫ হাজার টাকার দাবিতে তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।'
Comments