শিক্ষককে তুলে নিয়ে পেটালেন আ. লীগ নেতা

সিসিটিভি ফুটেজে শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার পেটানোর দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় শিক্ষককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

সেই কক্ষের সিসিটিভি ক্যামেরায় এ দৃশ্য ধরা পড়ে। আজ শুক্রবার রাতে সেই সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় আহত রৌমারী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী হক চিকিৎসার জন্য রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।

সেদিন রাতেই তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকনসহ ২ জনের বিরুদ্ধে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আহত শিক্ষক নুরুন্নবী হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও আসাদুল ইসলামের সঙ্গে তার মতবিরোধ ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে রোকনুজ্জামান রোকন ও তার সহযোগীরা নুরুন্নবীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে প্রথমে পলি বাস কাউন্টারে আটকে রাখেন। সেখানে তাকে গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাকে মোটরসাইকেলে করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রার অফিস কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়োগ সংক্রান্ত কথা বলার সময় রোকনুজ্জামান রোকন তাকে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পরে আবু হোরায়রা রোকনুজ্জামানকে নিভৃত করেন।

তিনি বলেন, 'রোকনুজ্জামান নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার পছন্দের শিক্ষককে নিয়োগ দিতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। আমি তার কথায় রাজি না হওয়ায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।'

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ডেইলি স্টারকে জানান, ওই প্রধান শিক্ষক তাকে দালাল বলেছিলেন। তাই নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে তিনি তাকে ধাক্কা মেরেছিলেন, কিন্তু মারধর করেননি।

তবে মারধরের সত্যতা নিশ্চিত করে রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোকনুজ্জামান রোকন একজন শিক্ষককে মারধর করে চরম অন্যায় করেছেন। এ ঘটনা আমার অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। রোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপ কুমার সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে এবং পুলিশ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

7h ago