চুয়াডাঙ্গায় বাউল আখড়ায় হামলা-ভাঙচুর
চুয়াডাঙ্গা সদরের বেলগাছি গ্রামে একটি বাউল আখড়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আখড়াটি ফকির লালন শাহের অনুসারী মুনতাজ শাহের মাজার ও দরগা শরিফ নামে পরিচিত।
প্রায় ৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ আখড়ায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে হামলা চালানো হয়।
হামলার পর ওই আখড়া থেকে অনেক বাউল প্রাণভয়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
হামলার ঘটনায় বুধবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও বিকেল পর্যন্ত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
আখড়াবাড়ির খাদেম আজিজুর রহমান লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পর একদল দুষ্কৃতিকারী ধারালো অস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাউলদের গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আখড়ার ঘরের টিনের বেড়া কেটে দেয়, বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
আখড়ার আঙিনার ফুল-ফলের গাছ কেটে ফেলে ও মাজারের তাঁবু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ সময় আখড়ায় রক্ষিত দানবাক্স ভেঙে অন্তত ৫০ হাজার টাকা লুট করা হয় বলেও অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বুধবার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মুসলিমপাড়া মাঠে এই আখড়াবাড়ির অবস্থান। মাজারটিতে প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি বাউল অনুসারীদের নিয়ে বাউল গানের আসরসহ সাধু-ফকিরদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
জানতে চাইলে আখড়াবাড়ির সভাপতি শাহ আবদুর রাজ্জাক ডেইলি স্টারকে হামলাকারীদের নাম বলতে পারেননি। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কাউকে চেনা গেছে, কাউকে চেনা যায়নি।
তবে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাউলদের সমাজ থেকে উচ্ছেদ করতেই এ ধরনের অপতৎপরতা।'
যোগাযোগ করা হলে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাউলদের ওপর এই হামলা নতুন কিছু নয়। এ জেলায় একাধিকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিচার না হওয়ায় এসব ঘটনা থামছে না।'
জানতে চাইলে ওসি মাহাবুর রহমান বলেন, 'হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত চলছে।'
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
Comments