সুস্থ আলালকে কেন পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলো, প্রশ্ন স্বজনদের

সুস্থ আলালকে কেন পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলো, প্রশ্ন স্বজনদের
শোকাহত আলালের স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি আলাল উদ্দিন (৫০) মারা যাওয়ার আগে তাকে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতাল ও পরে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গত ৬ জুন সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হন সুস্থ আলাল। পায়ে হেঁটে তিনি ডিবি পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে যান।

আলাল উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাতে রাজধানীর তুরাগ থানার বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় দাফন করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মর্গ সূত্রে জানা গেছে, আলালের ডান হাত ও ডান পায়ে ব্যান্ডেজ ছিল।

আলালের মৃত্যুর পর শোকাহত স্ত্রী পারভিন বেগম কথা বলতে না পারলেও অন্যান্য স্বজনরা রোববার রাতে গণমাধ্যমকে জানান, আলাল উদ্দিন ৬ তারিখ সন্ধ্যায় সুস্থ অবস্থায় হেঁটে বাসা থেকে বের হন। এলাকার অনেকেই তাকে হেঁটে যেতে দেখেছে।

স্বজনরা বলেন, আলালকে ৬ তারিখ প্রথমে থানা থেকে ডাকা হয়। তিনি থানা থেকে ফেরার পর বাসায় এসে গোসল করে খাওয়া-দাওয়া করেন। এরমধ্যেই ফোন পেয়ে আবার বাসা থেকে বের হন। উনি সরল মনে যাওয়ার পর থাকে তারা (ডিবি পুলিশ) গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি।

শুক্রবার মারা যাওয়ার পর আলালের খবর পায় পরিবার।

তারা বলছেন, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আলাল পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। তার মতো এমন নিরপরাধ ব্যক্তিকে কেন ডিবি পুলিশ আটক করল এমন প্রশ্ন করছেন তারা।

এমন সুস্থ একজন মানুষকে কেন পঙ্গু হাসপাতালে এবং হৃদরোগ ইনস্টিউটে ভর্তি করা লাগল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

আলাল উদ্দিনের চাচাতো ভাই রিয়াজ উদ্দিন গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিবি যখন নিয়ে যায় তখন আমার ভাই আলাল সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ আমাদের জানানো হয় যে তিনি হৃদরোগ হাসপাতালে মারা গেছেন।'

'আমরা যখন ওই হাসপাতালে যাই, তখন আমাদের বলা হয় যে তার মরদেহ পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে', বলেন রিয়াজ।

বাউনিয়াবাঁধ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আলাল উদ্দিন ওই এলাকারই একটি ভবনে কেয়ারটেকারের কাজ করতেন। ওই ভবনে ৬ জুন এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়েছিল বলে মনে করছেন স্বজনরা।

পুলিশ বলছে, আলালকে আটক করা হয় ১০ জুন। আটকের সময়ই তার পায়ে সমস্যা ছিল। এজন্য তাকে সেদিনই জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়।

রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় আলালকে ১৬ জুন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়ার হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তবে ৬ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত আলাল কোথায় ছিলেন এবং তিনি পায়ে কীভাবে আঘাত পেলেন সে বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।

এসব প্রসঙ্গে জানতে ডিবির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার আকরামুল হোসেনকে রোববার রাতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেনকে ফোন করা হলেও, তিনিও ফোন ধরেননি।

তবে গতকাল তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'আলালকে ডিবি আটকের সময় তার পায়ে সমস্যা ছিল। আদালতের আদেশে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।'

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago