হত্যার উদ্দেশ্যে লঞ্চের কেবিন ভাড়া, ৪ বছর পর যা জানা গেল

দেলোয়ার মিজি। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকায় লিলুফা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন চাঁদপুরের দেলোয়ার মিজি। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি লঞ্চের কেবিন ভাড়া নিয়ে সেখানে লিলুফাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের নয় দিন পর ব্রুনাই চলে যান দেলোয়ার।

দীর্ঘ তদন্তের পর সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ৫৭ বছর বয়সী লিলুফা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে।

এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেলোয়ার (৪৪) ব্রুনাই থেকে ঢাকায় ফিরলে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

দেলোয়ার মিজি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার মোল্লাবাড়ি নাসিরকোর্ট গ্রামের মৃত আ. মান্নানের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেলোয়ার ২০১৯ সালের ১৬ জুন লিলুফাকে কীভাবে হত্যা করেছিলেন, সেই বর্ণনা দিয়েছেন একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে।

পিবিআই জানায়, কাঠমিস্ত্রি হিসেবে কাজের সুবাদে দেলোয়ারের সঙ্গে ২০১২ সালের পরিচয় হয় চাঁদপুরের বাসিন্দা লিলুফার। লিলুফার স্বামী স্বামী মারা যান ২০১৫ সালে। এরপর ধীরে ধীরে লিলুফার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে দেলোয়ারের এবং ব্রুনাই যাওয়ার পরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকে।

দেলোয়ার ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল ২ মাসের ছুটিতে দেশে ফিরলে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। লিলুফা দেলোয়ারকে চাপ দিতে থাকেন বিয়ের জন্য। কিন্তু লিলুফাকে বিয়ে না করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন দেলোয়ার।

পরিকল্পনা করে প্রতিবেশী মুদির দোকানদার জাহাঙ্গীরের নামে এবং লিলুফার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে মিতালি-৭ লঞ্চের একটি সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া নেন দেলোয়ার। সেখানে লিলুফাকে হত্যা করে জাহাঙ্গীরের ওপর দায় চাপানোর পরিকল্পনা ছিল তার।

২০১৯ সালের ১৬ জুন চাঁদপুর থেকে লঞ্চ ছাড়ার পর কেবিনে লিলুফাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন দেলোয়ার। তাদের সম্পর্কের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লিলুফার মোবাইলে থাকায় সেটি সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান এবং ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় থাকেন। এ ঘটনার নয় দিন পর দেলোয়ার আবারও ব্রুনাই চলে যান।

পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার আরও বলেছেন, ব্রুনাই থেকে দেশে আসার কিছু দিন আগে এক আত্মীয়কে তিনি ভয়েস রেকর্ডেড মেসেজের মাধ্যমে লিলুফা হত্যা মামলার খোঁজ নিতে বলেন এবং মামলা শেষ করতে টাকা লাগবে কি না, তা জানতে বলেন। এক পর্যায়ে দেশে ফিরলে সমস্যা হবে না—এমন আশ্বাসে বাংলাদেশে আসেনে দেলোয়ার। বিমানবন্দর থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লিলুফার ভাই মনির হোসেন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ২০১৯ সালের ১৮ জুন মামলা করেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Time’s List: Yunus among 100 most influential people

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has been named among TIME magazine’s 100 Most Influential People of 2025.

4h ago