কুড়িগ্রাম

আ. লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা: দুই ছাত্রলীগ নেতা তিন দিনের রিমান্ডে

কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোয়ানকে (৪৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু ও ঝিনুক মিয়াকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ নেতা ঝিনুক মিয়া (বামে) এবং কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোয়ানকে (৪৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু ও ঝিনুক মিয়াকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার রাত থেকেই তাদের রিমান্ড শুরু হয়েছে।

পুলিশ গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে কুড়িগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লিটন চন্দ্র রায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রিমান্ড শেষে আগামী মঙ্গলবার দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কুড়িগ্রাম শহরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে নিহতের স্ত্রী রোজিনা বেগম কুড়িগ্রাম সদর থানায় চার জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওসি মাসুদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোয়ান কুড়িগ্রাম শহরের ঘোষপাড়া এলাকার আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এছাড়া তিনি জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য।

গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু। তিনি কুড়িগ্রাম শহরের খেজুরেরতল চৌধুরী পাড়া এলাকার বিপুল চৌধুরীর ছেলে। অপরজন কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক মিয়া।
 
পুলিশ জানায়, নিহত আওয়ামী লীগ নেতার প্রাইভেটকারের সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মীর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানতে পেরেছি। শুক্রবার সন্ধ্যায় খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকে পেটান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ভুক্তভোগী নিজের রাজনৈতিক পরিচয় দেওয়ার পরও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে রেহাই দেননি।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ডেইলি স্টারকে জানান, আওয়ামী লীগ নেতা সোয়ান তার রাজনৈতিক পরিচয় দিলে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ছাত্রলীগ নেতা বিন্দু। সেসময় বিন্দু বলেন, 'তুই আওয়ামী লীগ নেতা হয়েছিস, তাতে কী হয়েছে। তোর মতো অনেক আওয়ামী লীগ নেতা মাঠে-ঘাটে পড়ে আছে'। এরপর ছাত্রলীগ নেতা বিন্দু ও তার অনুসারীরা এলাপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতাকে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধরের একপর্যায়ে সোয়ান রাস্তায় পড়ে গেলেও তাকে পা দিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি মারা হয়।  

ওসি মাসুদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই ছাত্রলীগ নেতার রিমান্ডে হত্যাকাণ্ডটির রহস্য বেড়িয়ে আসছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার নাম ও পরিচয় জানা গেছে। পুলিশ সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। খুব দ্রুত সব আসামি গ্রেপ্তার হবে।'

 

Comments