ধর্ষণ অভিযোগ তুলে নিতে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ
নরসিংদীর মনোহরদীতে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানা থেকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে ভুক্তভোগী পরিবারকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার বলছে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার পাশাপাশি ওই উপজেলার একজন ইউপি সদস্যও তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য। এ নিয়ে আজ রোববার নরসিংদীর আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহেল (২৮) মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক এবং ইউপি সদস্য আলফাজ উদ্দিন আকন্দ লেবুতলা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সোহেল মিয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে ডেকে এনে ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণ করে সোহেল মিয়া। এসময় নারীর চিৎকারে লোকজন এলে সোহেল পালিয়ে যায়।
এদিন বিকেলে মনোহরদী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগীর ভাই বলেন, 'সালিশ করে সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে সমাধান না করে উল্টো হয়রানি করছে লেবুতলা ইউপি সদস্য আলফাজ উদ্দিন আকন্দ। মামলা প্রত্যাহার করতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশও বিষয়টি নিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। তাই নরসিংদী আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছি।'
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূইয়া বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কিনা জানেন না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ও মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, 'লিখিত অভিযোগ একবার এসে প্রত্যাহার করে গেছে, পরে, আবার এসে এটাকে মামলা হিসেবে নথিভুক্তিকরণের কথাও বলে গেছে। এ বিষয়ে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নরসিংদী আসার পর কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে দরকার হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহেল বলেন, 'ইউপি সদস্য আলফাজ উদ্দিন আকন্দ বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন। নারীও থানা থেকে লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে। ধর্ষণের মতো কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমি গত নির্বাচনে নুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর পক্ষে কাজ করায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। তাই চেয়ারম্যান আমাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।'
অভিযুক্ত লেবুতলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলফাজ উদ্দিন আকন্দ বলেন, 'ধর্ষণের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ কথা পুলিশকেও বলেছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকায়, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা অভিযোগ করছে।'
লেবুতলা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, 'এলাকাবাসী সবাই জানে যে, ভুক্তভোগীর সঙ্গে অভিযুক্ত সোহেলের সম্পর্ক ছিল। সোহেল ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত তবে, আমার সাথে তার কোনো বিরোধ নাই। আমি পুলিশকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছি।'
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীকে একাধিকার কল দিলেও ধরেননি।
Comments