পূবালী ব্যাংকের ‘নিখোঁজ’ ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে সাড়ে ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এক কোটি ৯৩ লাখ টাকার পে-অর্ডার ছাড়া, বাকি টাকার লেনদেন ব্যক্তিগত স্বার্থে হয়েছে বলে মনে করছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
নিখোঁজ চাঁদপুর শহরের পূবালী ব্যাংক নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী। ছবি: সংগৃহীত

গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে গত ৪ এপ্রিল থেকে সপরিবারে 'নিখোঁজ' চাঁদপুর শহরের পূবালী ব্যাংক নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী।

তিনি নিখোঁজের পর ব্যাংকের প্রায় দুই কোটি টাকার একটি পে-অর্ডারের হিসাব মিলছে না এবং দুই গ্রাহক তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন।

ব্যাংকের ওই শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবিরসহ ৮ কর্মকর্তাকে ক্লোজ করে রিজিওনাল অফিসে নেওয়া হয়েছে। 

পূবালী ব্যাংকের কুমিল্লার রিজিওনাল ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কিন্তু, 'নিখোঁজ' ব্যাংক ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে ওই শাখা থেকে কী পরিমাণ আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে, সে বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুখ খোলেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

অথচ, ওই শাখার বেশ কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করেছেন যে, সাবেক ম্যানেজার শ্রীকান্ত নন্দী তাদের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে  পালিয়ে গেছেন।  

স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওকে এন্টারপ্রাইজের দাবি, ঈদের আগে তারা ম্যানেজার শ্রীকান্তকে তাদের প্রতিষ্ঠানের কাজে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬২ টাকা চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে তাদের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলেন। 

কিন্তু, ম্যানেজার শ্রীকান্ত ওই টাকা উত্তোলন করে ওকে এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টে জমা দেননি।

অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকের একাধিক দল, দুদক ও পুলিশের তদন্ত চলছে। 

রিজিওনাল ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা শ্রীকান্ত নন্দীকে কোথাও খুঁজে পাইনি। এ জন্য বিষয়টি র‍্যাবকে জানিয়েছি। তারা দেখছে তিনি সপরিবারে বর্ডার ক্রস করেছেন কিনা।' 

অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা চাঁদপুরের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পেট্রলিয়াম কর্তৃপক্ষের ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার পে-অর্ডারের টাকার হিসাব পাচ্ছি না। এটা ছাড়া বাকি যেসব টাকার বিষয় বলা হচ্ছে, তা ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দীর সঙ্গে ব্যক্তিগত লেনদেন ছিল।'

ওকে এন্টারপ্রাইজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হুমায়ুন কবির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ঘটনাটির তদন্ত করছি। এটি সহ আমরা দুটি অভিযোগ পেয়েছি। অপরটি স্থানীয় ব্যবসায়ী আকবর হোসেন লিটনের ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। দুটি লেনদেন ব্যক্তিগত স্বার্থে হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।'

জানতে চাইলে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যাংকের ও আশেপাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দ্রুত ঘটনা উদঘাটনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

Comments