রেস্তোরাঁয় ‘মদ চেয়ে না পেয়ে’ পুলিশের হামলার অভিযোগ ‘ভুল বোঝাবুঝি’

বান্দরবান

'মদ চেয়ে না পেয়ে' বান্দরবান শহরের একটি রেস্তোরাঁয় হামলার অভিযোগ উঠেছিল কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মংনেথোয়াই মারমার বিরুদ্ধে। তবে এখন ওই ঘটনাকে 'ভুল বোঝাবুঝি' বলছে উভয়পক্ষ।

শহরের মধ্যমপাড়া এলাকার তোহজাহ রেস্তোরাঁয় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও রেস্টুরেন্টের মালিক পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এতে রেস্তোরাঁর মালিক, তার স্ত্রী ও শিশুসন্তানসহ পাঁচ জন আহত হন।

রেস্টুরেন্ট মালিকের অভিযোগ ছিল, মদ চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এ হামলা হয়। 

অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তা মংনেথোয়াই মারমা বলছেন, মদ নয়, তিনি রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন ওই রেস্টুরেন্টে। কিন্তু, রেস্তোরাঁ মালিকসহ অন্যান্যরা মদ্যপ অবস্থায় থাকার কারণে তার স্ত্রীর সঙ্গে তারা অসম্মানজনক আচরণ করেন এবং এ কারণে সেখানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

পরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি টিম গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করে। 

হাতাহাতিতে আহত রেস্টুরেন্ট মালিক ও তার ভাইদের বান্দরবান জেলার সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

এরপর রেস্টুরেন্ট মালিকের ভাই শিল্পী খিং সাই মং ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করে বলেন, 'অ্যাডিশনাল এসপি মদ চেয়েছিলেন এবং মদ না পেয়ে রেস্টুরেন্টে মারপিট ও ভাঙচুর করেছেন।'

পরে বুধবার সকালে ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে গেলে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

জানা গেছে, কুমিল্লার জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মংনেথোয়াই মারমা ও তার স্ত্রীর বাড়ি বান্দরবান শহরে। নববর্ষের ছুটিতে কুমিল্লা থেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন তারা।

সেদিনের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মংনেথোয়াই দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ও আমার স্ত্রীসহ দুই সন্তান, আমার শ্যালক ওয়াশিং মং ও তার ৪ মাসের সন্তান এবং আমার ভায়রা ও তার পাঁচ মাসের মেয়েকে নিয়ে‌ পাশের একটি মুন্ডি দোকানে মুন্ডি খাওয়া শেষে "তোহজাহ" রেস্টুরেন্টে ভাত খেতে যাই। দোকানে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে রেস্টুরেন্টে থাকা সুই সাইং নিজেকে দোকানের মালিক দাবি করে মাতাল অবস্থায় খুব রূঢ়ভাবে আমাদের উদ্দেশ্য করে বলেন "আমাদের দোকানে লোক কম। আপনার খেতে চাইলে বসেন অপেক্ষা করেন অথবা চলে যান।" এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা চলে যেতে চাই এবং দোকান থেকে বের হতে থাকি। তখন পেছন থেকে সুই সাইং অপমানসুচক শব্দে আমাদের উদ্দেশ্য বলেন "যান যান বেরিয়ে যান খাওয়ার প্রয়োজন নেই।" আমার স্ত্রী ও শ্যালক উইসিংয়ের স্ত্রী দোকানে ঢুকে সুই সাইং এর মায়ের কাছে অভিযোগ করে বলেন, "আমরা রেস্টুরেন্টে টাকা দিয়ে খেতে এসেছি। আমাদের সঙ্গে এরকম অপমানজনক ব্যবহার করবেন কেন?"

এখানে মদ চাওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি বানোয়াট বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে 'ভুল বোঝাবুঝির' অবসান হয় এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়।

রেস্টুরেন্ট মালিকের ভাই শিল্পী খিংসাইমং পরে সামাজিক মাধ্যমে এসে বলেন, 'অ্যাডিশনাল এসপি মংনেথোয়াই ভাইকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি। উনি যেহেতু এই এলাকারই সন্তান। আমি সব খবর নিয়েছি। সেদিন উনারা শুধু রাতের খাবার খেতে এসেছিলেন। কোনো মদ চাওয়া হয়নি।' 

'গত দুই-তিন দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অনেক দুর্নাম ছড়িয়ে গেছে আমাদের। অনেক বিড়ম্বনার শিকারও হয়েছি। আসলে আমার ছোট ভাই বয়সে ছোট। সে কার সঙ্গে কী ব্যবহার করতে হয় জানে না। তাই এমন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে,' বলেন তিনি।

এই 'ভুল বোঝাবুঝি' নিয়ে কেউ যেন অহেতুক মিথ্যা সংবাদ না ছাড়ায় সে বিষয়ে সবার প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে উভয়পক্ষ।

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

7h ago