ভুয়া তথ্যে এনআইডি: আজিজের ২ ভাইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে ইসি

তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ও হারিস আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের দুই ভাই 'মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে' জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

হারিস আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ কীভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি কার্ড পেলেন, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের অনুমোদন পেয়েছে কমিশনের এনআইডি শাখা।

গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুর্নীতির অভিযোগে গত ২১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়

জেনারেল (অব.) আজিজ ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নেতৃত্ব দেন।

পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে আজিজ সবার বড়। তার ভাই তোফায়েল, হারিস ও আনিস আহমেদ ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন খুন, চাঁদাবাজি ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার জন্য।

শুধুমাত্র জোসেফের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজি ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে ১০টি মামলা হয়েছে। ২০০৪ সালে একটি হত্যা মামলায় জোসেফের মৃত্যুদণ্ড এবং হারিস ও আনিসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

২০১৮ সালে জোসেফ এবং ২০১৯ সালে হারিস ও আনিস হত্যা মামলা থেকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার পর মিডিয়ার মনোযোগ যায় জেনারেল (অব.) আজিজের দিকে।

কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি 'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন' শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি সম্প্রচার করে। সেখানে দাবি করা হয় যে ভাইদের শাস্তি মাফ করাতে প্রভাব খাটিয়েছিলেন জেনারেল (অব.) আজিজ।

সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল জাজিরার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এই ডকুমেন্টারিকে 'মিথ্যা' ও 'অবমাননাকর' বলে আখ্যা দিয়েছে।

হারিস ও জোসেফ দুজনেই এখন বিদেশে আছেন বলে ধারণা করা হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, সাজা মওকুফের জন্য জোসেফের মা যে আবেদন করেছেন, সেখানে আব্দুল ওয়াদুদ ও রেনুজা বেগমকে জোসেফের বাবা-মা উল্লেখ করা হয়েছে।

কিন্তু সুলেমান সরকার ও রাহেলা বেগমকে বাবা ও মা হিসেবে দেখিয়ে মোহাম্মদ হাসান নামে একটি এনআইডি কার্ড নিয়েছেন হারিস। ২০১৯ সালে এনআইডি কার্ডে তার ছবিও পরিবর্তন করেছিলেন। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এই ছবি পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করেছিলেন।

আজিজ আহমেদের আরেক ভাই তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের দুটি এনআইডি রয়েছে। তোফায়েলের একটি এনআইডি কার্ডে বাবা-মায়ের নাম ছিল আব্দুল ওয়াদুদ ও রেনুজা বেগম। আরেকটি এনআইডি কার্ডে নিজের নাম তানভীর আহমেদ তানজিল এবং বাবা-মায়ের নাম সুলেমান সরকার ও রাহেলা বেগম দেখানো হয়েছে।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ অনুযায়ী, এনআইডি কার্ড পাওয়ার জন্য মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

এনআইডি কার্ড জাল করা বা জেনেশুনে জাল কার্ড বহন করলে সাত বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি এনআইডি কার্ড জাল করতে সহায়তা করেন, তবে তাকেও একই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

NBR officials end strike after govt warning

Following a stern government warning and mounting pressure from the country’s top business leaders, officials of the National Board of Revenue have withdrawn their shutdown.

4h ago