কুষ্টিয়ায় লালন অনুসারী বিধবার ঘর ভাঙচুর

কুষ্টিয়ায় লালন অনুসারী বিধবার ঘর ভাঙচুর
চায়না বেগম | ছবি: আনিস মণ্ডল/স্টার

'কোথাও জায়গা না হলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতি বছর বাতাসার সিন্নি হলেও করবা'—মৃত্যুর আগে গাজীর উদ্দিন ফকির তার স্ত্রী চায়না বেগমকে কথাগুলো বলে গিয়েছিলেন।

লালন সাঁইয়ের অনুসারী চায়না বেগমও চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন। ভিটেমাটিতে প্রতিদিন জ্বালাবেন সন্ধ্যা প্রদীপ।

তার সেই চাওয়া পূরণ হলো না। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের বাসিন্দারা গত বুধবার তার ঘর ভেঙে দিয়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে চায়না বেগম জানান, ঘর ভাঙার সময় প্রতিবাদ করতে গিয়েও তিনি হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

কুষ্টিয়া সদর থানায় এ ঘটনায় চায়না বেগম অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য এনামুল হক, মাতব্বর মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪৫-৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে চায়না উল্লেখ করেছেন, গত বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা তার ঘর ভাঙচুর করেন। এতে তার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া, তারা চায়নাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন।

চায়নার বোন জামাই সাধু শাহাবুদ্দিন সাবু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের অপরাধটা কী? আমরা সাধু সমাজ কি নিজের জমিতেও আর থাকতে পারবা না? আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।'

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, 'ওই বৃদ্ধা বাড়ি করেছেন একটি মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায়। সেখানে যাওয়ার পথ নেই, তাকে দেখারও কেউ নেই। এছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানা হওয়ার আশঙ্কায় তার ঘরটি এলাকাবাসী ভেঙে দিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ওই বৃদ্ধা চাইলে আমরা রাস্তার পাশে বাড়ি করে দিতে পারি। কিন্তু উনি সেখানেই থাকতে চান।'

অভিযোগের তদন্তভার পেয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুজ্জামান। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ বিকেল ৪টায় উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। সেখানে একটি সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করা হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt issues ordinance amending Anti-Terrorism Act

Activities of certain entities, and activities supporting them can now be banned

46m ago