কলেজশিক্ষার্থীকে ‘হেফাজতে’ নির্যাতনের অভিযোগে ১৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এক কলেজশিক্ষার্থীকে আটকের পর নির্যাতনের অভিযোগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ১৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেনের আদালতে এ মামলা করেন ওই শিক্ষার্থীর ভাই নজরুল ইসলাম।

সরকারি সিটি কলেজের প্রাণিবিদ্যা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেনকে গত ১৮ জুলাই আটক করে কোতয়ালী থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। 

সিএমপি দক্ষিণ জোনের সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) ও কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ও দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।

অপর আসামিরা হলেন-কোতয়ালী জোনের টহল পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান, বাকালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম, কোতোয়ালী জোনের ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল মো. শাহজাহান, কোতোয়ালী সার্কেলের এসি অতনু চক্রবর্তী, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এসএম ওবায়দুল হক, সেকেন্ড অফিসার এসআই গৌতম, এসআই মেহেদী হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রণেশ বড়ুয়া ও রুবেল মজুমদার, কনস্টেবল কামাল, বাকালিয়া থানার ওসি আফতাব উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার এসআই মিজান, কনস্টেবল ইলিয়াস এবং দক্ষিণের জোনের সাবেক ডিসি মোস্তাফিজুর রহমান।

এছাড়া ৫-৬ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশকে আসামি করা হয়েছে।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বরূপ কান্তি নাথ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) সংশ্লিষ্ট থানায় এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।'

মামলার এজাহারে বলা হয়, কলেজশিক্ষার্থী নাজমুল ১৮ জুলাই নগরীর বাকালিয়া নতুন ব্রিজ এলাকায় ছাত্রদের অবরোধ ও বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়, লাঠিচার্জ করে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দিকে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। 

নাজমুলকে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছ থেকে পুলিশ হেফাজতে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। আটকের পর নাজমুলকে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ভেতরে পুলিশ প্রথমে মারধর করা হয় এবং পরে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও নির্যাতন করে আহত করা হয়। কোতয়ালী থানার ওসি ওবাইদুল নাজমুলের মোবাইল ফোনে কিছু না পেয়ে 'শিবির' সন্দেহে মারধোর করে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

নির্যাতনের পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ নাজমুলকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলে পুলিশ তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাকালিয়া থানায় নিয়ে যায়। বাকালিয়া থানায় তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে তাকে চমেক ভর্তি করা হয়। পরে ১৯ জুলাই বাকালিয়া থানায় দায়ের করা একটি নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আহত অবস্থায় নাজমুল বেশ কয়েকদিন কারাগারে কারাগারে ছিলেন এবং পরে জামিনে মুক্ত হয়ে চিকিৎসা নেন।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

8h ago