ধর্ষণের অভিযোগে কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা

‘সেখানে পুলিশ ও প্রশাসন উপস্থিতিতে আমরা মেয়েটিকে ওই শিক্ষকের রুম থেকে উদ্ধার করি। মেয়েটি জানায় যে ওই শিক্ষক তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছেন। তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হয় এবং তাকে মারধর করে।’
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে আদিবাসী শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা।

আজ মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই শিক্ষককে মারধরের ঘটনা ঘটে এবং এর জেরে জেলা শহরে বাঙালিদের সঙ্গে আদিবাসীদের সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনার পর খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকা ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

কলেজটির অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ আল হাসান বলেন, 'আজ সকাল ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন শিক্ষক আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানার ওপর হামলা করে। আহত অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।'

তিনি বলেন, 'তাকে কেন মারধর করা হয়েছে সেটা জানি না।'

পরে তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রিপল বাপ্পী চাকমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপুর ২টার দিকে ওই শিক্ষককে হাসপাতালে মৃত অভস্থ্য আনা হয়।'

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রোজলিন শহীদ চৌধুরী জানান, হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই শিক্ষককে মৃত ঘোষণা করেছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী উক্যনু মারমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোহেল রানা সকাল ৯টার দিকে সপ্তম শ্রেণির এক ত্রিপুরা ছাত্রীকে তার কোয়ার্টারে ডেকে নিয়ে যান। এটা তার সহপাঠীরা দেখে ফেলে এবং আমাদের জানায়। আমরা বেশ কয়েকজন কলেজে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষের কাছে যাই মেয়েটির খোঁজ নিতে।'

তিনি বলেন, 'সেখানে পুলিশ ও প্রশাসন উপস্থিতিতে আমরা মেয়েটিকে ওই শিক্ষকের রুম থেকে উদ্ধার করি। মেয়েটি জানায় যে ওই শিক্ষক তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছেন। তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হয় এবং তাকে মারধর করে। এই ঘটনার জের ধরে সেখানকার সেটলার বাঙালিরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।'

রোজলিন শহীদ চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। সেখানে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে এবং ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা বেগম জানান, তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং এই মুহূর্তে কথা বলা সম্ভব না।

Comments

The Daily Star  | English

The psychological costs of an uprising

The systemic issues make even the admission of one’s struggles a minefield

9h ago