আদালতে শিবলী রুবাইয়াতের কান্না

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের রিমান্ড ও জামিন উভয় আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

তবে দুদককে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো একদিন তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান শিবলীকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল মো. জজ জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, শিবলী বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচারে জড়িত ছিলেন। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে তাকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার।

আসামিপক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম তার মক্কেলকে হয়রানির জন্য মামলায় জড়ানোর কারণ দেখিয়ে রিমান্ড বাতিলসহ জামিনের আবেদন করেন।

একপর্যায়ে বিচারক শিবলীকে জিজ্ঞেস করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলবেন কি না।

সেসময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শিবলী আদালতে বলেন, তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও অস্পষ্ট। উপরন্তু বিদেশে অর্থপাচার না করে তিনি দেশে রেমিট্যান্স নিয়ে এসেছেন।

এসময় আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তিনি বলেন, একটি কোম্পানি থেকে তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পাঠিয়েছেন।

শিবলী আরও বলেন, 'দুদক এর আগে শুধু আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টই নয়, আমার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে। তাই আদালতের কাছে আমাকে জামিন দিতে এবং রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেছি।'

গত ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা শিবলীকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর শিবলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৭৬ হাজার টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক।

এজাহার অনুসারে, বাড়ি ভাড়ার ভুয়া চুক্তিপত্র দেখিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এক কোটি ৯২ লাখ টাকা ঘুষ নেন।

এছাড়া, রপ্তানি জালিয়াতি অংশ হিসেবে পণ্য বিক্রির ভুয়া চুক্তির মাধ্যমে আরও এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

২০২০ সালে তিনি বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর গত বছরের মে মাসে চার বছরের জন্য পুনরায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত সপ্তাহে শিবলীসহ নয়জনের পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে শিবলী এবং বিএসইসির সাবেক ও বর্তমান আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে দুদক।

Comments

The Daily Star  | English
Hilsa fish production in Bangladesh

Hilsa: From full nets to lighter hauls

This year, fishermen have been returning with lesser catches and bigger losses.

12h ago