কল্যাণপুরে ‘জঙ্গি নাটক সাজিয়ে’ ৯ তরুণ হত্যা: শহীদুল হক, আসাদুজ্জামান মিয়া কারাগারে

শহীদুল হক ও আসাদুজ্জামান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

২০১৬ সালে রাজধানীর কল্যাণপুরে 'জঙ্গি নাটক সাজিয়ে' নয় তরুণকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পুলিশের সাবেক তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)।

তারা হলেন—পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর বিভাগের সাবেক উপকমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা।

প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারকের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ৭ মে তারিখ নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৬ সালের আগস্টে রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িকে 'জঙ্গি আস্তানা' ঘোষণা করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়। অভিযানে গুলি করে নয় তরুণকে হত্যা করা হয় এবং একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, 'শেখ হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাহাজবাড়িতে ইসলামি মনোভাবাপন্ন নয় নিরপরাধ তরুণকে হত্যা করেছিল। ওই অভিযান মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিয়েছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'ওই তরুণদের পুলিশ আগেই আটক করে ওই বাড়িতে রেখেছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাও ছিল না।' 

'শেষ পর্যন্ত তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখানো হয় এবং এ কারণে তাদের মরদেহ কেউ নিতে আসেনি,' বলেন তিনি।

ওই ঘটনাকে 'রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ড' হিসেবে অভিহিত করে তাজুল বলেন, 'তৎকালীন সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে "জঙ্গি নাটক" সাজিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।'

'ওই সরকার ব্যাপক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছিল,' উল্লেখ করেন তিনি।

ওই ঘটনায় গত ৬ মার্চ আইসিটিতে মামলার পর সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর বিভাগের সাবেক উপকমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে প্রসিকিউশন।

Comments