শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, ১৬ জুনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। 

একইসঙ্গে তাকে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

একই আদেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং তাকেও ১৬ জুনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, গ্রেপ্তার সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকেও ১৬ জুন হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সকালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইসিটি রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র জমা দেয় প্রসিকিউশন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাড়ে আট হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আইসিটিতে জমা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ হলো:

১. গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উস্কানিমূলক বক্তব্য: ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা ও সহায়তায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর ব্যপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে হামলা চালায়। এর মাধ্যমে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ করা হয়। এসব ঘটনায় আসামিদের প্ররোচনা, উষ্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শান্তি প্রদান না করা এবং ষড়যন্ত্র ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়।

২. হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আন্দোলনকারীদের দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এই নির্দেশ বাস্তবায়নে তাদের অধীনস্থ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদান, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে।

৩. রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে তাদের নির্দেশ, প্ররোচনা, উস্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্র, অন্যান্য অমানবিক আচরণের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন হয়েছে। 

৪. চাঁনখারপুলে ছাত্র হত্যা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার চাঁনখারপুল এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন ছাত্র নিহত হন। এই ঘটনাতেও শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

৫. আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা; তাদের মধ্যে পাঁচজনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া এবং একই সঙ্গে গুরুতর আহত একজনকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনায় তিন আসামি কর্তৃক হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উষ্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্র, অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran says taking measures to continue nuclear programme

"Plans for restarting (the facilities) have been prepared in advance, and our strategy is to ensure that production and services are not disrupted," said the head of the Atomic Energy Organization of Iran

15m ago