ছাত্রলীগ নেতাকে ‘ছাড়াতে গিয়ে’ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতার ভাইয়ের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্থানীয় ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের হাতে আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে 'ছাড়িয়ে নেওয়া'কে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদল নেতার ভাই মামুন হোসেন ভূঁইয়া (৩২) নিহত হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন মারা যান বলে জানিয়েছেন তার বড়ভাই ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হোসেন।
নিহত মামুন ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। তার গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান আছে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকায় ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকাকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। সেখানে যুবদল নেতা বাদলের অনুসারী কর্মী-সমর্থকরাও ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতাকে বাদলের বাড়ির দিকে নেওয়ার পথে হামলা চালায় সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু ও তার সমর্থকেরা। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাদল হোসেনের অভিযোগ, এ সময় বাবু ও সমর্থকরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালালে আমার ছোটভাই মামুন গুলিবিদ্ধ হয়।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাবু ছাত্রলীগ নেতার পক্ষ নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে ফায়ার করে। আমার ছোটভাই তখন গুলিবিদ্ধ হয়। রাতে ভাইটা মারা গেছে।'
সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু উপজেলা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।
গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তার দাবি, গোলাগুলির খবর তিনি পেয়েছেন, তবে সেখানে তিনি ছিলেন না।
স্থানীয়রা জানান, রূপগঞ্জে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং অপরটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। দিপু ভূঁইয়ার অনুসারী বাদল হোসেনের সঙ্গে কাজী মনিরের অনুসারী বাবুর স্থানীয় আধিপত্য নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্ব আছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জেনেছি। এই ঘটনায় রাতেই একটি মামলা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর কাগজপত্র পেলে আদালতে আবেদনের মাধ্যমে মামলাটিতে হত্যার ধারাও যুক্ত হবে।'
এদিকে গতকালের ঘটনায় আটক ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, 'স্থানীয় লোকজন তাকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছে। সে এখন পঙ্গু হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। চিকিৎসা শেষ হলে আদালতে পাঠানো হবে।
Comments