ঘুষ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আখাউড়ায় ২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

সাংবাদিক ফজলে রাব্বি ও সাদ্দাম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলা হয়েছে।

ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলা করেন।

মামলায় দৈনিক যুগান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্টাফ রিপোর্টার মো. ফজলে রাব্বি ও আরটিভির আখাউড়া উপজেলা প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৪ আগস্ট আরটিভি অনলাইন ও ৭ আগস্ট দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আব্দুস সাত্তারসহ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, যাত্রী হয়রানি, অবৈধ পারাপার এবং চোরাচালান চক্রকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ করা হয়। 

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মেডিকেল ভিসায় ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা অবৈধভাবে আদায় হচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, যাত্রীদের পাসপোর্টে ভুয়া সিল মারা, অবৈধভাবে অবস্থান করানো এবং নির্দিষ্ট চক্রকে পারাপারে সহায়তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৬ মার্চ যুগান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মো. ফজলে রাব্বি ও আরটিভির আখাউড়া প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জের কক্ষে গিয়ে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে ২৫ মার্চ তারা আবার অফিসে গিয়ে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

প্রতিবেদনের বিষয়ে যুগান্তরের সাংবাদিক ফজলে রাব্বি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। এই মামলা হয়রানিমূলক এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা।'

আরটিভির প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন বলেন, 'মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। সঠিক তদন্ত হলে দুর্নীতির চিত্র স্পষ্ট হবে।'

আখাউড়া সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, 'অনিয়ম প্রকাশ করলেই যদি মামলা হয়, তবে সত্য প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।'

মামলা প্রসঙ্গে বাদী আব্দুস সাত্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই গণমাধ্যমকর্মী তাদের প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবি ও ভিডিও দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তারা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে, রুবেল ও ফেরদৌস নামের দুই যাত্রীকে আমরা ফেরত পাঠিয়েছি। কিন্তু মূলত ভারতীয় ইমিগ্রেশন নিজেদের নীতিতে এই দুজন যাত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।'

জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে চাঁদাবাজি ও মানহানির কথা উল্লেখ রয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

CMP chief orders police to open fire if faced with weapons

The verbal directive, issued over wireless on Tuesday night, applies to all CMP personnel

2h ago