‘ওপেনে নৌকায় সিল’ মারার নির্দেশ ইউপি সদস্যের
আগামী সাত জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন ভোটারদের প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার এক ইউপি সদস্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার ২ নম্বর চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আকবর হোসেন শাহনাজ এক উঠান বৈঠকে এ নির্দেশ দেন।
তার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওই এলাকার ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।।
ভিডিওতে ওই ইউপি সদস্যকে ভোটারদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, 'কোনো মা-বোন যদি পর্দার আড়ালে ঢুকে সিল মারেন, তাহলে আমি মনে করব, আপনারা নৌকায় ভোট দেননি।'
তিনি বলেন, 'মা-বোনদের উদ্দেশে বলি, কেন্দ্রের ভেতরে পর্দা থাকে, ওই পর্দার ভেতরে ঢুকবেন না। আপনারা যদি ঢোকেন আমি মনে করব, ভোট দেওয়া হয়নি। টেবিলের ওপর ওপেন সিল মেরে দেখাই দিবেন, নৌকায় ভোট দিছি।'
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউপি সদস্য আকবর হোসেন শাহনাজ নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছেন। গতকাল তিনি তার ওয়ার্ডের নারী ভোটারদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেন।
এ আসনে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহীন ট্রাক প্রতীকে নির্বাচনে লড়ছেন।
ইউপি সদস্যের প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারার নির্দেশের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিন।
অভিযোগে শাহিন বলেন, 'শাহানাজ মেম্বারের মতো এই আসনের প্রায় ৪৫টি ভোটকেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী একরামুলের লোকজন ট্রাক প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া তারা ভোটারের কেন্দ্রে না যেতেও বারণ করছে।'
প্রকাশ্যে সিল মারার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মো. আকবর হোসেন শাহনাজ গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি ভুল করেছি। কথা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারার কথা বলে ফেলেছি। শুনছি, আমাকে নাকি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।'
জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল আমিন সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকাশ্যে সিল মারা সংক্রান্ত ইউপি সদস্যের বক্তব্যের ভিডিও পেয়েছি। ভিডিওটি ইতোমধ্যে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে।'
যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
Comments