নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মোমেন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আমাদের নিজেদের জনগণের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত।’
এ কে আব্দুল মোমেন
বৈঠকে এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে আব্দুল মোমেন।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ সময় আব্দুল মোমেন বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আমাদের নিজেদের জনগণের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত। বাংলাদেশের জনগণ এ দেশ স্বাধীন করেছে, কেউ সার্টিফিকেট দিয়ে স্বাধীন করেনি। অন্য লোক দিয়ে এটার সত্যতা প্রমাণ করতে হবে কেন?'

তিনি বলেন, 'অনেক বিদেশি পর্যবেক্ষক আসছেন, ২২৭ জন। বহু সাংবাদিক আসছেন, অনেকগুলো বড় বড় প্রতিষ্ঠান থেকে পর্যবেক্ষক আসছেন। আমি আমেরিকাতে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দেখিনি, ভারতে দেখিনি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা একটি পরিণত গণতন্ত্র, উন্নত গণতন্ত্র। আমরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছি। খুব কম দেশের মানুষই এরকম রক্ত দিয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। আমরা কেন অন্যের সার্টিফিকেটে চলব? কেন এত দেউলিয়া হব?'

আজ সন্ধ্যায় আইআরআইয়ের তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দল সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে যান।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন আইআরআইয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সিনিয়র উপদেষ্টা জেফরি ম্যাকডোনাল্ড, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডেভিড হোগস্ট্রা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন ছিল দেশের বড় দুটো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মধ্যে তিক্ততা ভবিষ্যতে কীভাবে কমানো যায়। কোনো সাজেশন আছে কি না। আমি বলছি যে বড় দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগের প্রয়োজন আছে। তাছাড়া বিএনপির উচিত ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি করা, কারণ তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমে গেছে।'

তিনি বলেন, 'তাদের ইস্যু এখন দুইটা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ আর তাদের নেত্রীর মুক্তি। তাদের নেত্রী জেলে না বাইরে এটা নিয়ে পাবলিকের কোন…যখন দ্রব্যমূল্য বাড়ল, তাদের উচিত ছিল এই ইস্যু পিক করা। যখন গ্যাসের দাম বাড়ল, তখন ইস্যু পিক করা। কিন্তু তারা সেটা করেনি, কারণ তাদের নেতৃত্বে পরিপক্কতা নেই।'

'আর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ—কোথাও যদি তারা দেখাতে পারে যে একটা গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কোনো কারণ ছাড়া পদত্যাগ করে আমলাদের দায়িত্ব দেবে, এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া না,' বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'পর্যবেক্ষকদের আরেকটা আলোচনার বিষয় ছিল বিএনপির নির্বাচনে না আসা। আমি বলেছি যে বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ সংলাপের অভাবে হয়েছে। তারা নিজেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে এমন বোকামি হতো না। বয়কট করে সরকার পরিবর্তন করা যায় না।'

মন্ত্রী মোমেন আরও বলেন, 'পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে কেমন সাড়া পাচ্ছি তা জানতে চেয়েছেন। তাদের বলেছি যে সাড়া পাচ্ছি, কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্দ্বী শক্ত কেউ নেই। তাই মানুষ ভাবতে পারে আমি জিতব, আর তাই ভোট দিতে নাও আসতে পারে।'

তিনি বলেন, '৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিনটি ঠিক হয়নি। সপ্তাহের মাঝখানে হলে ভালো হতো। আগে শুক্রবার ও শনিবার থাকায় অনেকেই গ্রামের বাড়িতে বা বেড়াতে চলে যাবে। সারা দেশজুড়েই এটা হবে।'

বিএনপির হরতাল ও যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের কথায় অনড় থাকে, তাহলে তাদের বিএনপির ওপর রেস্ট্রিকশন আরোপ করা উচিত। কারণ তারা নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইতোমধ্যে করেছে, কারণ তারা নাম প্রকাশ করে না।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt uncertain of Hasina's whereabouts: Foreign Adviser

"We inquired with Delhi and with the United Arab Emirates, no one has been able to provide official confirmation," said the adviser

23m ago