বিএনপি নেতাকর্মীদের ভোট বর্জনে সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ

ভোটের দিনের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন-পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে বিএনপি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের ভোট বর্জনে সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ
বিএনপির লোগো | সংগৃহীত

ভোটের দিনসহ সারা দেশে দুই দিনের হরতালের ডাক দিলেও আগামীকালের নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের সহিংসতার দায় নিতে চায় না বিএনপি।

বিএনপি নেতাকর্মীদের আজ শনিবার থেকে হরতাল কার্যকর করতে বললেও আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতা ও সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

বিএনপি নেতারা বলছেন, সারাদেশে যেহেতু নিরাপত্তা জোরদার থাকবে, তাই ঝটিকা মিছিল করা গেলেও বৃহৎ জনসমাগম কঠিন হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, 'নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো মহলের সঙ্গে সংঘর্ষে না জড়াতে সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিএনপির বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ তুলছেন এবং আমাদের ওপর সহিংসতার তকমা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ফাঁসাতে ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে যানবাহন ও ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মতো নাশকতামূলক কাজ করছে।

গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অধিকাংশ নেতা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, কে সরকার গঠন করবে বা নির্বাচিত হবে, যেহেতু ভোটের সংখ্যা সেটা নির্ধারণ করবে না, তাই নির্বাচন প্রতিহত করা অর্থহীন।

'কিন্তু ভোটার যত কম হবে, সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা তত কম থাকবে। সুতরাং, ভোটারদের নির্বাচন বর্জন করতে প্ররোচিত করাই নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য করার মূল চাবিকাঠি', বলেন দলের এক জ্যেষ্ঠ নেতা।

অন্য এক নেতা বলেন, অনেক আসনে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘাত হবে এবং সরকার এর দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিতে চাইবে।

তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভোটার উপস্থিতি ২০ শতাংশের বেশি হবে না। তাহলে আমরা কেন সহিংসতার দায় নেব?

গত ১২ জুলাই থেকে বিএনপি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে।

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পর দলটি প্রতি সপ্তাহে চার দিন হরতাল ও অবরোধের ডাক দেয়।

হরতাল ও অবরোধ অকার্যকর হয়ে পড়েছে—তা বুঝতে পেরে গত ২৪ ডিসেম্বর গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। দলটি ২১ ডিসেম্বর থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় এবং জনগণের প্রতি এই সরকারকে সহযোগিতা না করার আহ্বান জানায়।

জনগণকে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করতে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী হরতাল পালন করে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, নির্বাচন বর্জনের অংশ হিসেবে বিএনপি হরতাল ডেকেছে।

তিনি বলেন, 'আমরা জনগণকে ধর্মঘট পালন ও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। এজন্য আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব।'

ভোটের দিনের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন-পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে বিএনপি।

Comments