কাল মন্ত্রিসভা গঠন, আলোচনায় নতুন মুখ

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, আগামী মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাটদের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা খুবই কম।
কাল মন্ত্রিসভা গঠন, আলোচনায় নতুন মুখ
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গভবনে শপথ নেবেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

এবারের মন্ত্রিসভায় দলের বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা সুযোগ পেতে পারেন বলে দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে। কারণ পরবর্তী প্রজন্মের নেতাদের সামনে আনতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করলেও অনেক নেতা মনে করেন, বর্তমান মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, তাদের জায়গায় পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিসম্পন্নদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, 'সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী যে কৌশল অনুসরণ করেছিলেন, মন্ত্রিসভার সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তিনি সেটাই অনুসরণ করতে পারেন।'

জাতীয় সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগ তখনকার ৭১ জন এমপিকে বাদ দিয়ে ৮১ সদস্যের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ থেকে ৩৭ জনকে বেছে নেন।

বর্তমান মন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, কে এম খালিদ ও জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নতুন মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞদের পাশাপাশি নতুন মুখ থাকবে। কিন্তু সর্বোপরি পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।'

এ ছাড়া বছরের পর বছর ধরে দলের প্রতি অবিচল আনুগত্য দেখিয়েছেন, এমন নেতাদের ব্যাপারেও বিবেচনা করা হবে।

গত নভেম্বরে তিন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীর পদত্যাগের পর বর্তমান মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জন আছেন। তাদের মধ্যে ২৩ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, আগামী মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাটদের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা খুবই কম।

কিছু বর্তমান মন্ত্রীকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পাওয়া একজন আওয়ামী লীগ নেতা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্যও নতুন মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে গঠিত মন্ত্রিসভায় বাদ পড়া বেশ কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায় ফিরে আসতে পারেন।

রোববারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ২২২টি আসনে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি আসন।

জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন এবং আওয়ামী লীগের তিন শরিক দলের প্রতিটি (বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি) একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে।

টানা চতুর্থবারের মতো সরকার প্রধান হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, যেসব মন্ত্রী অসন্তোষজনক কাজ করেছেন, তারা হয়তো পরবর্তী মন্ত্রিসভায় থাকবেন না।

আজ সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল (এএলপিপি) তাদের নেতা নির্বাচনের জন্য একটি সভা করবে। এরপর এএলপিপির নেতা রাষ্ট্রপতিকে সরকার গঠনের জন্য আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অনুরোধ করবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন গতকাল বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

Comments