‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ উপজেলা আ. লীগ সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করলেন সংসদ সদস্য

‘মোর্শেদ আলম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সেনবাগে একনায়কতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম।’
‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ উপজেলা আ. লীগ সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করলেন সংসদ সদস্য
নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখছেন মোর্শেদ আলম | ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে দল ও পদ থেকে বহিষ্কার করেছেন একই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম।

আজ সোমবার দুপুরে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মো. জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করা হলেও অভিযোগ উঠেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এবং পরবর্তীতে অপর এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার জেরেই তাকে বহিষ্কার করেছেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম।

একই অভিযোগে সেনবাগ উপজেলার আরও দুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও একটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকে অব্যাহতি দিয়ে ওই পদে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী মোর্শেদ আলম বিজয়ী হন। নির্বাচনে মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। পরে তিনি নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বাফুফের ভাইস প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান ভূইয়া মানিককে সমর্থন দেন।

অভিযোগ রয়েছে, এই ঘটনার পর থেকে মোর্শেদ আলমের সঙ্গে মো. জাহাঙ্গীর আলমের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এমনকি নির্বাচনের আগে তারা পরস্পর বিরোধী বক্তব্যও দিয়েছেন।

মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, 'মোর্শেদ আলম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সেনবাগে একনায়কতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। পরে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে আতাউর রহমান ভূইয়া মানিকের পক্ষে কাজ করি। এতে মোর্শেদ আলম আমার ওপর ক্ষিপ্ত ও প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেছেন।'

তিনি দাবি করেন, 'ওই ঘটনা জের ধরে সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করছেন মোর্শেদ আলম। আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। একজন উপজেলা সভাপতি কোনোভাবেই আমাকে বহিষ্কার করতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলবো।'

সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম বলেন, 'জাহাঙ্গীর আলম দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকায় বর্ধিত সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে বহিষ্কারের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সবার মতামতের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।'

এই ব্যাপারে কথা বলতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ ন ম খায়রুল আলম সেলিমের মোবাইলে কল করা হলে তা রিসিভ করেন তার ব্যক্তিগত সহকারী। তিনি বলেন, 'স্যার ব্যস্ত আছেন। এখন কথা বলা যাবে না।'

আজ দুপুরে সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মো. জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে তার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাহার উল্যা বাহারকে।

এ ছাড়া, সেনবাগের ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আহাদকে অব্যাহতি দিয়ে রেজাউল হক চৌধুরীকে, অর্জুনতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহাব উল্যাকে অব্যাহতি দিয়ে কুতুব উদ্দিন পাটোয়ারীকে এবং মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসানকে অব্যাহতি দিয়ে আব্দুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Comments