আগামী নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার বিষয়ে যথাসময়ে জানাবে ইসি

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি এবং সমর্থন দুটোই রয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ইভিএম বিষয়ে পাওয়া মতামত ও পরামর্শের জবাবে ইসি এসব কথা জানিয়েছে।

ইসি আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দল, আইন, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।

ইসি প্রতিবেদনে ইভিএম বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামত ও পরামর্শের জবাবে ইসি জানিয়েছে, যেহেতু সদ্য সমাপ্ত রাজনৈতিক সংলাপ ছাড়াও ইতোপূর্বে ইভিএম নিয়ে আরও সংলাপ, কর্মশালা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে এবং কমিশন যেহেতু ইভিএমের সার্বিক বিষয়ে এখনো স্থির কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি, সেহেতু সদ্য সমাপ্ত রাজনৈতিক সংলাপ ছাড়াও ইতোপূর্বে ইভিএম নিয়ে আরও যেসব কর্মশালা, মতবিনিময়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে তার সার্বিক ফলাফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণ করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার বিষয়ে কমিশন যথাসময়ে অবহিত করবে।

ইসির প্রতিবেদন অনুসারে, ইভিএম বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামত ও পরামর্শে অনেক দলের পরামর্শ ছিল, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার না করা। এর কারণ হিসেবে উল্লখ করা হয়েছে, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট কারচুপির সুযোগ রয়েছে। সাধারণ জনগণ ইভিএমে অভ্যস্ত নন, ইভিএমে ভোটগ্রহণে দেরি হয় ইত্যাদি। এ ছাড়া কয়েকটি দলের পরামর্শ ছিল ইভিএমের শুদ্ধতা নিশ্চিত ও অপপ্রয়োগ প্রতিরোধ করা না গেলে ইভিএমের ব্যবহার পরিহার করে কাগজি ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করতে হবে। 

এ ছাড়া কয়কটি দলের পরামর্শ ছিল পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করে ইভিএমের শুদ্ধতা নিশ্চিত করে ইভিএমের ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু দলের পরামর্শ ছিল ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হলে ভোটাধিকার প্রয়োগ অধিক নিশ্চি হবে। ভোটকেন্দ্রে অর্থশক্তি ও পেশি শক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ বন্ধ থাকবে। যা যান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। ব্যালট পেপার ছিনতাই করে ব্যালট বাকশ ভরার কথিত অভিযোগ ও সুযোগ থাকবে না ইত্যাদি।

এ ছাড়া একটি দল থেকে ব্লক চেইন পদ্ধতিতে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসে ই-ভোট প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি দলের প্রস্তাব ছিল ১৫০টি আসনে ইভিএম, বাকি ১৫০টি আসনে ব্যালট পেপার ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলো মতামত ও পরামর্শের জবাবে ইসি জানিয়েছে, ইভিএমের বিষয়ে কমিশন মনে করে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি এবং সমর্থন দুটোই রয়েছে। কমিশন তা শুনেছে এবং মতবিনিময় করেছে। ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে ইতোপূর্বে সবগুলো দলের (কয়েকটি দল অংশ গ্রহণ করেনি) আমন্ত্রিত প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সংলাপ ও কর্মশালা করা হয়েছে।

এ ছাড়া বুয়েটসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিষয়ের অধ্যাপকদের অংশগ্রহণে একাধিক সংলাপ ও কর্মশালা করা হয়েছে। 

ব্লক চেইন পদ্ধতিতে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসে ই-ভোট প্রদানের প্রস্তাবটি আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রয়োগ সম্ভব নয়। 

বর্তমান ৫ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর নিবন্ধিত সবগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপের আমন্ত্রণ করে। গত ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি দল সংলাপে অংশগ্রহণ করে। দুটি দলকে আবেদনের ভিত্তিতে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সংলাপে অংশ গ্রহণের জন্য সময়  দেওয়া হয়েছে। ৯টি দল প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে সংলাপে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল। 

 

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

1h ago