সালথায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে শাহদাবের পক্ষে মহড়া

ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর ওরফে লাবু চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিশাল মহড়া করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
সালথায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে শাহদাবের পক্ষে মহড়া
দুপুরের পর থেকে সালথা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সালথা উপজেলা সদরের বাইপাস সড়কে সমবেত হয়। পরে সালথা-ময়েনদিয়া সড়কে কাউলিকান্দা থেকে ফুকরা বাজার পর্যন্ত মিছিল হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর ওরফে লাবু চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিশাল মহড়া করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে সালথা উপজেলা সদরে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

শাহদাব আকবর ওরফে লাবু চৌধুরী সদ্যপ্রয়াত সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরের পর থেকে সালথা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সালথা উপজেলা সদরের বাইপাস সড়কে সমবেত হয়। 

পরে সালথা-ময়েনদিয়া সড়কে কাউলিকান্দা থেকে ফুকরাবাজার পর্যন্ত মিছিল হয়েছে। মহড়ায় অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী এ মহড়ায় অংশ নেয়। এ সময় 'নৌকা, 'নৌকা' স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সদরের বেশ কয়েকটি সড়ক। মহড়া শেষে সদরের কাউলিকান্দা স্কুলে মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি।  বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতির কারণে উপজেলা সদরের বেশ কয়েক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ইজিবাইক, রিকশাভ্যান, নসিমন চালকসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে।

আজকের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া, সাজেদা চৌধুরীর সাবেক এপিএস মো. শফি উদ্দিন, উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান, বৃহত্তর নগরকান্দা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ইমামুল হোসেন ওরফে তারা মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হাসান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী সাব্বির আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসানসহ আরও অনেকে। 

এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতারাসহ সব ইউপি চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, 'রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার বিকল্প নেই। তাই আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত ঘরে ফিরবো আমরা- ইনশাল্লাহ।'

এদিকে সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এ বলা হয়েছে, জনগণের চলাচল বিঘ্নিত করতে পারে এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথসভা করতে পারবে না এবং তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিও একইভাবে জনসভা বা পথসভা ইত্যাদি করতে পারবে না।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হবিবুর রহমান বলেন, 'জনগণের চলাচল বিঘ্নিত করে এ জাতীয় কোনো আয়োজন করে থাকলে তাতে নির্বাচনী অচরণ বিধি লঙ্ঘন হয়। তবে এ ব্যাপারে কোনো ব্যক্তি বা প্রার্থী কোনো অভিযোগ দেয়নি।'

'আচরণবিধি লঙ্ঘন করি নি'- দাবি করে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'এটি কোনো পরিকল্পিত ঘটনা ছিল না। আমরা কয়েকজন নেতা সালথা উপজেলা পরিষদের সামনে ছিলাম। ওই সময় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা জড়ো হয়ে আমাদের দেখে মিছিলের সামনে নিয়ে যায়। আমরা ইচ্ছেকৃতভাবে এটি করিনি।' 

'ওই মহড়ার জন্য জনগণ কিংবা যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়নি,' বলে দাবি করেন তিনি।

সদ্যপ্রয়াত সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে সংসদীয় এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

Comments