ইভিএমের চেয়ে বড় সমস্যা নির্বাচন কমিশন নিয়ে: বদিউল আলম মজুমদার

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘ইভিএমের চেয়ে বড় সমস্যা নির্বাচন কমিশন নিয়ে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং তাদের যদি ইভিএম দেওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।’
নাগরিক সংলাপে অংশ নেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার। ছবি: স্টার

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, 'ইভিএমের চেয়ে বড় সমস্যা নির্বাচন কমিশন নিয়ে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং তাদের যদি ইভিএম দেওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।'

আজ শুক্রবার বিকেলে রংপুরে আরডিআরএস বাংলাদেশের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে অংশ নেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, 'নির্বাচন কমিশন বলছে, ইভিএম দিয়ে জালিয়াতি করা যায় এটা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা কমিশনকে বারবার বলছি, কেউ কিন্তু অভিযোগ করেনি যে, বাইরের কেউ ইভিএমে জালিয়াতি করতে পারে। যদিও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে তা সম্ভব।'
 
'আমরা বলছি যে, ইভিএম এমন একটা দুর্বল যন্ত্র, নিকৃষ্ট যন্ত্র যে, এটা দিয়ে স্যুট-কোট-টাই পরে ভদ্রলোকরা জালিয়াতি করতে পারে। এটা দিয়ে জালিয়াতি করতে পারে মূলত নির্বাচন কমিশন, তাদের কর্মকর্তা, তাদের কারিগরি টিম এবং নির্বাচন কেন্দ্রে বা বুথে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা।'

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'ইভিএমের বড় আর একটা দুর্বলতা হলো, ভোট হয় ইলেকট্রিক্যালি আর ফলাফল তৈরি হয় ম্যানুয়ালি। এখানে অনেক সুযোগ আছে কারসাজির। সুতরাং এই ইভিএম আমাদের জন্য সঠিক নয়। আর বর্তমান বাজার মূল্যে এবং অর্থনৈতিক মন্দায় ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কেধা কোনোভাবেই সমুচিত হবে না।'

আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে উল্লেখ করে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'আমরা এমন একটা আইনি কাঠামো চাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের মাধ্যমে আমাদের আইনকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে, আমাদের সংবিধানকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে। যার ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।'

'আমরা চাই এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হোক, এমন একটা সাংবিধানিক কাঠামো আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হোক যার মাধ্যমে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হবে। নির্বাচন কমিশন তার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ করতে পারবে।'

গাইবান্ধার উপনির্বাচনকে কারচুপির নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করে তা বন্ধ করায় কমিশনকে সাধুবাদ জানালেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারায় সমালোচনা করেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচন বন্ধ করা না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।'

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'কোনো দলীয় সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না, কেন না আমরা দেখেছি অতীতের যত নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে। তবে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে, নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে হবে তা নির্ধারণ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। আমরা শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছি। তা ছাড়া সংবিধান সংস্কার করে ইসির অধীনে থাকা সংস্থাগুলো শক্তিশালী করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।'

পরে আরডিআরএস বাংলাদেশের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে 'কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, সংকট সমাধানে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার' শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপে সুজন রংপুর জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিতি ছিলেন সুজনের রংপুর মহানগর সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) নাসিমসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।

Comments

The Daily Star  | English

Japanese atomic bomb survivor group Nihon Hidankyo wins Nobel Peace Prize

The Nobel Peace Prize was on Friday awarded to the Japanese anti-nuclear group Nihon Hidankyo, a grassroots movement of atomic bomb survivors from Hiroshima and Nagasaki

32m ago