চট্টগ্রাম ১০ আসনের উপনির্বাচন

আ. লীগের বিরুদ্ধে ২ দফা হামলার অভিযোগ, ভোট বর্জনের পরও স্বতন্ত্র প্রার্থী আতঙ্কে

চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী তার ওপর দুই দফা হামলার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী তার ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী তার ওপর দুই দফা হামলার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ রোববার ভোট চলাকালে নগরের ফইল্যাতলী বাজারে অবস্থিত প্রাণহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ডা. ফজলুল হাজারা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা করে। পরে পুলিশ তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় বলে জানান তিনি।

আরমান আলী বেলুন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। দুপুরে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রাণহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখি চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু ৩০-৪০ জনকে নিয়ে কেন্দ্রের ভেতর অবস্থান করছেন এবং তাদের আরও শতাধিক লোক কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করছে। দেবুকে দেখি লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের জিজ্ঞেস করছেন, কারা নৌকার ভোটার। যাদের হাতে আমার কার্ড ছিল, তাদের লাইন থেকে বের করে দেন তিনি।'

'প্রতিবাদ করলে দেবু জানতে চান আমি কে? আমি প্রার্থী শুনে তিনি আমাকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। দেবুর সঙ্গীরা আমাকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যেতে চাইলে আমি প্রিসাইডিং অফিসারের শরণাপন্ন হই। তিনি অসহায়ত্ব প্রকাশ করলে কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশকে জানাই। তারা তখন আমাকে বলেন, যেহেতু ঝামেলা হচ্ছে আমি যেন কেন্দ্র থেকে চলে যাই', বলেন তিনি।

আরমান আলী বলেন, 'কেন্দ্র থেকে বের হলে বাইরে অপেক্ষমান আওয়ামী লীগের লোকজন আমার ওপর হামলা করবে, এই আশঙ্কায় একই কেন্দ্রের অপর পাশে ডা. ফজলুল হাজারা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে যাই। সেখানেও দেখি একই অবস্থা। আমার এজেন্ট এবং ভোটারদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে আওয়ামী লীগের লোকজন আমাকে মারধর শুরু করে।'

'এসময় আমি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি হামলার ঘটনা শুনে ফোন কেটে দেন। পরে পাহাড়তলি থানার ওসিকে ফোন করলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। সেসময় পুলিশের উপস্থিতিতেও আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের লোকেরা আমাকে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। পরে পুলিশ আমাকে পাহারা দিয়ে বাসায় পৌঁছে দেয়', বলেন তিনি। 

স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, 'হামলায় আহত হলেও ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে কোথাও চিকিৎসা নিতে যেতে পারিনি। এখন আতঙ্কের মধ্যে ঘরে বসে আছি। এমতাবস্থায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।'

প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষ নাথ দেবু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই প্রার্থীর সঙ্গে কারও কথা কাটাকাটি বা কোনো ঝামেলা হয়নি। আমি বুঝতে পারছি না- কেন তিনি আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। তাকে তো আমি চিনিই না।'

ওই কেন্দ্রে কেন গিয়েছিলেন? জানতে চাইলে দেবু বলেন, 'ওই কেন্দ্রে একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়েছে শুনে খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম বিষয়টা কী।'

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই প্রার্থীর সঙ্গে আমার ফোনে কোনো কথা হয়নি। হামলার বিষয়ে জানতে পারলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।'

পাহাড়তলি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই প্রার্থীকে পুলিশ পাহারায় বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।'

কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলে প্রার্থীকে পুলিশ পাহারায় বাসায় পৌঁছে দেওয়া হলো কেন? জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'তিনি ভয় পাচ্ছিলেন, তাই আমরা তাকে বাসায় পৌঁছে দেই।'

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago