পরিকল্পনামন্ত্রীর আয় কমেছে, নেই বাড়ি-ঘর-ফ্ল্যাট

হালনাগাদকৃত হলফনামায় মন্ত্রীর নিজের নামে থাকা অকৃষি জমি, আধাপাকা ৩টি টিনশেড ঘর, ফ্ল্যাটের কোনো উল্লেখ নেই।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ফাইল ছবি

পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মান্নানের আয় কমেছে। নেই ঘর-বাড়ি-ফ্ল্যাট ও রাজধানীর জমি। তবে অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামার সাথে বিগত তিন নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়।

২০০৮ সালে কৃষি ও শেয়ার থেকে এম এ মান্নানের বার্ষিক আয় ছিল ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও তার স্ত্রী বা নির্ভরশীলদের আয় ছিল ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে তার বাড়িভাড়া, শেয়ার ও সংসদ সদস্য সম্মানীবাবদ তার বার্ষিক আয় কমে ৮ লাখ ৪৮ হাজার ১৭৯ টাকায় নামে। সেসময় তার স্ত্রী বা নির্ভরশীলদের কোনো আয় তিনি প্রদর্শন করেননি।

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এম এ মান্নানের বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় মোট ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৩১ টাকা। যার মধ্যে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ২৮০ টাকা বাড়িভাড়া থেকে, শেয়ার থেকে ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬২২ টাকা, পেশাগত আয় ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা ও ভাতা বাবদ ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩২৯ টাকা। এবারও তার স্ত্রী বা নির্ভরশীলদের কোনো প্রদর্শিত আয় ছিল না।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে একই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী মন্ত্রীর বর্তমান বার্ষিক আয় কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ১৩ হাজার ২১২ টাকা। যার মধ্যে পেশাগত আয় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, চাকরিবাবদ আয় ১৪,৩৮,২১২ টাকা ও অন্যান্য ভাতা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সময় এম এ মান্নানের নামে ছিল ৫ দশমিক ৩২ একর কৃষি জমি, ১৩ শতক অকৃষি জমি (পুকুর), আধাপাকা ৩টি টিনশেড ঘর, দশমিক ৪২ একরে বাড়ি, রাজধানীর নিকুঞ্জে ৩ শতক ও আশুলিয়ায় ৪ শতক ভূমি।

সেসময় তার স্ত্রীর নামে ছিল ৪ দশমিক ৭৮ একর কৃষি জমি, ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ১টি ফ্ল্যাট ও ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতক জমি। তবে এরপর থেকে মন্ত্রীর স্থাবর সম্পদ দ্রুত কমেছে।

২০১৪ সালে মান্নানের নামে ছিল ৫ দশমিক ৩২ একর কৃষি জমি, দশমিক ৪৫ একর অকৃষি জমি, আধাপাকা ৩টি টিনশেড ঘর, ১টি ফ্ল্যাট ও তার স্ত্রীর নামে ৫ দশমিক ৬৮ একর কৃষি জমি। ২০১৮ সালেও এ সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় অপরিবর্তিত থাকে।

তবে হালনাগাদকৃত হলফনামায় মন্ত্রীর নিজের নামে থাকা অকৃষি জমি, আধাপাকা ৩টি টিনশেড ঘর, ফ্ল্যাটের কোনো ‌উল্রেখ নেই।

বর্তমানে তিনি কেবলমাত্র ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৫ দশমিক ৩৪ একর কৃষি জমির মালিক। একইসাথে তার স্ত্রীর নামে আছে ২০ হাজার টাকার কৃষি জমি যার পরিমাপ উল্লেখ নেই হলফনামায়।

স্থাবর সম্পত্তি না থাকলেও মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বিগত সময়ের তুলনায় প্রায় আড়াইগুণ বেড়েছে।

২০০৮ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পর মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৬৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ও তার স্ত্রীর ২৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যা ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৭৬ টাকা। তবে এ সময় তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের উল্লেখ ছিল না হলফনামায়।

২০১৮ সালে মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ১ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ১৪৮ টাকা। যার মধ্যে নগদ টাকা ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৪ টাকা, ব্যাংক জমা ৫৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০২ টাকা, ৬৯ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৫৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮২ টাকা গাড়ি রয়েছে। এ সময় স্ত্রীর নামে কোনো অস্থাবর সম্পত্তির উল্লেখ করা হয়নি হলফনামায়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় মন্ত্রী তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫ টাকা ও তার স্ত্রীর নামে ৮৭ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৫ টাকা।

মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৪২৮ টাকা ব্যাংকে, ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১ টাকা নগদ, ১ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯৬ টাকার গাড়ি ও ৬০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ রয়েছে।

তার স্ত্রীর সম্পদের মধ্যে নগদ ৩১ লাখ ৫০ হাজার ৮৮৫ টাকা ও ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago