ঢাকা-১৯

সম্পদ বেশি সাইফুলের, কম প্রতিমন্ত্রী এনামের

হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বার্ষিক আয় ও সম্পদের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছেন সাইফুল ইসলাম এবং পিছিয়ে রয়েছেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। আসনটিতে মূলত তিন জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
এনামুর রহমান, তৌহিদ জং মুরাদ ও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবপস্থানা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে এ সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির সাবেক সংসদ সদস্য তালুকাদার মোহাম্মদ তৌহিদ জং মুরাদ ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য পদত্যাগ করা ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তাদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বার্ষিক আয় ও সম্পদের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছেন সাইফুল ইসলাম এবং পিছিয়ে রয়েছেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। আসনটিতে মূলত এই তিন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।

সাইফুল ইসলাম তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৯২ টাকা। কৃষি, ভাড়া, ব্যবসা, জমি ক্রয় বিক্রয় ও ঠিকাদারি ব্যবসা থেকে এই আয় করেছেন তিনি। এনামুর রহমানের এফডিআর ও ব্যাংক সুদ, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ভাতা থেকে বার্ষিক মোট আয় ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৫ টাকা। সাবেক সংসদ সদস্য মুরাদ জংয়ের বাড়ি ভাড়া, ব্যবসা, এফডিআর ও অন্যান্য খাত থেকে বার্ষিক আয় ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ২৪৬ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের দিক থেকেও এগিয়ে সাইফুল

অস্থাবর সম্পত্তির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন সাইফুল ইসলাম। তার নগদ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা, শেয়ার, গাড়ি, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও ইলেক্টনিকস সামগ্রী, অগ্রিম জামানত ও ব্যবসা বিনিয়োগে মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৭ কোটি ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬১ টাকা। বিপরীতে এনামুর রহমানের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ২৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪৭ টাকা। মুরাদ জংয়ের নগদ টাকা, ব্যাংকে জমা, এফডিআর, শেয়ার, স্থায়ী আমানত, গাড়ি, স্বর্ণালঙ্কার, ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্র মিলিয়ে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৭ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯১ টাকা।

স্থাবর সম্পদেও এগিয়ে সাইফুল

স্থাবর সম্পদেও তিন প্রার্থীর মধ্যে এগিয়ে আছেন সাইফুল ইসলাম। তার মোট ২৪ কোটি ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৯৯৭ টাকা মূল্যের ৬৫৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ অকৃষি জমি, তিনটি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, ফ্ল্যাট ও একটি মৎস্য খামার আছে।

মুরাদ জংয়ের রয়েছে মোট ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৮ হাজার ৭২৯ টাকা মূল্যের ৪০ বিঘা কৃষি জমি, ১৫ কাঠা অকৃষি জমি, মার্কেট ও দুটি ফ্যাক্টরি শেড ও সাতটি ফ্ল্যাট পরিমাণ। প্রতিমন্ত্রী এনাম স্থাবর সম্পদ হিসেবে পূর্বাচলে তিন কাঠা জমির দাম দেখিয়েছেন ছয় লাখ টাকা।

দায়ের বোঝা এনামের

হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দায়ের দিক দিয়ে প্রতিমন্ত্রী এনাম এগিয়ে রয়েছেন। কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে তার ব্যাংক ঋণের পরিমাণ, ৮৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। সাইফুল ইসলামের ব্যাংক ঋণ রয়েছে মোট ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫২ হাজার ৩৯০ টাকা। এ ছাড়া মুরাদের তিনটি কারখানা ও দুটি মার্কেটের অগ্রিম ভাড়া বাবদ মোট ৫০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬২ টাকা।

সাইফুলের স্ত্রী ধনী, গরিব এনামের

তিন প্রার্থীর মধ্যে সাইফুলের স্ত্রী সবচেয়ে ধনী। সবচেয়ে গরিব এনামুরের স্ত্রী। সাইফুল ইসলামের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯৮ টাকা।এর মধ্যে রয়েছে স্বর্ণ, ব্যাংকে জমা টাকা, ইলেক্ট্রনিকস, আসবাবপত্র, অগ্রিম জামানত। তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮৯ লাখ ৪২ হাজার ১৩ টাকা। এর বাইরেও উপহার হিসেবে পাওয়া ৮৪ দশমিক ২৫শতাংশ কৃষি ও অকৃষি জমি এবং একটি কোম্পানির ৪০ শতাংশ শেয়ার। তবে হলফনামায় এসবের মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। বিপরীতে এনামুর রহমানের স্ত্রীর কোনো সম্পদ নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। মুরাদ জংয়ের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৭ লাখ ১ হাজার ৫৩২ টাকা ও ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

Comments