শূন্য হচ্ছে পুলিশের শীর্ষ পদ, চলছে তদবির

দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের বড় ধরনের রদবদল হয়েছে গত সপ্তাহে। এদিকে সংস্থাটির শীর্ষ পদগুলোতেও পরিবর্তনের সময় ঘনিয়ে আসছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পুলিশের বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা অবসরে যাবেন কিংবা তাদের বদলির সময় ঘনিয়ে এসেছে।
পুলিশ

দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের বড় ধরনের রদবদল হয়েছে গত সপ্তাহে। এদিকে সংস্থাটির শীর্ষ পদগুলোতেও পরিবর্তনের সময় ঘনিয়ে আসছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পুলিশের বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা অবসরে যাবেন কিংবা তাদের বদলির সময় ঘনিয়ে এসেছে।

এসব পদের মধ্যে আছে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন), অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার।

এসব পদের জন্য আগ্রহী অনেক কর্মকর্তা ইতোমধ্যে তদবির শুরু করেছেন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন কর্মকর্তা ৬০ বছর বয়সে অবসর-পরবর্তী ছুটিতে (পিআরএল) যান।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৫৯ বছর পূর্ণ হবে।

পরবর্তী পুলিশ প্রধান হিসেবে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার নাম শোনা গেলেও, কয়েকজন কর্মকর্তা অবশ্য বলছেন যে বেনজীর আহমেদ আরও এক বছরের জন্য এই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন।

তবে অনেকেই অবশ্য বলছেন যে অন্য কোনো যোগ্য কর্মকর্তাও আইজিপি হতে পারেন।

পরবর্তী আইজিপি হিসেবে অষ্টম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের নাম সামনে আসছে। তবে আগামী ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা।

অন্যান্যদের মধ্যে দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের এস এম রুহুল আমিন, মল্লিক ফকরুল ইসলাম এবং মো. কামরুল আহসানের নাম শোনা যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, বেনজীর আহমেদ আরও এক বছর আইজিপি পদে বহাল থাকলে ১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা ও পুলিশের বিশেষ শাখার বর্তমান প্রধান মনিরুল ইসলামকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হতে পারে।

এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওই সময়ের মধ্যে দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তাদের বয়স অবসরের বয়সসীমার কাছাকাছি হয়ে যাবে।

এদিকে, সিআইডি প্রধান মাহবুবুর রহমান গত ৩০ জুলাই পিআরএলে যান। গত বছরের ৩১ জুলাই অবসরের বয়সসীমা পৌঁছানোর পর সরকার তাকে এক বছরের জন্য আবার নিয়োগ দেয়।

পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের পদমর্যাদার এই পদটি এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শূন্য।

সূত্র জানায়, সিআইডি প্রধান হিসেবে দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের মো. আতিকুল ইসলাম ও ১৫তম বিসিএস ব্যাচের মোহাম্মদ আলী মিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে।

তবে শিগগিরই এ বিষয়ে সরকারি আদেশ জারি করা হবে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মঈনুর রহমান চৌধুরী আগামী ২ সেপ্টেম্বর অবসরের বয়সে পৌঁছাবেন।

ওই পদে দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা ও গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এস এম রুহুল আমিনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

র‍্যাবের বর্তমান ডিজি আবদুল্লাহ আল মামুনকে পুলিশ প্রধান করা হলে পরবর্তী র‌্যাব প্রধান হতে পারেন মল্লিক ফকরুল।

তবে পরবর্তী র‌্যাব প্রধান হিসেবে ১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের নামও সামনে আসছে।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামকে এক বছরের চুক্তিতে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়। কমিশনার হিসেবে তিনি ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর যোগ দিয়েছিলেন। তার চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ার তারিখ ৩০ অক্টোবর।

তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান। ১৭তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা হাবিবুর গোপালগঞ্জের বাসিন্দা।

সূত্র জানায়, মাহবুবুর রহমানকে ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব দিতে পুলিশের কর্মকর্তাদের একটি অংশ তদবির শুরু করছেন। জামালপুরের বাসিন্দা মাহবুবুর এখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে কর্মরত আছেন।

গত ৩ আগস্ট ৫০ জন এসপির বদলির প্রজ্ঞাপন দেয় সরকার। তাদের মধ্যে ৪০ জনকে নতুন জেলায় বদলি করা হয়।

কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশকে এসপিদের এটিই সবচেয়ে বড় রদবদল।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবসরের বয়স পার হওয়া মানে এই নয় যে কর্মকর্তারা পুলিশ বাহিনী ছেড়ে যাচ্ছেন।'

'কর্মকর্তাদের সার্ভিস রেকর্ড ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ করা হতেই পারে,' বলেন তিনি।

সাবেক মহাপরিদর্শক বলেন, 'এটা খুবই স্বাভাবিক যে পুলিশ প্রশাসনে শীর্ষ পদগুলো শূন্য হলে ৭-৮টি পদে পরিবর্তন আনা হবে।'

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৪০ জন এসপির বদলি কোনো বিতর্ক তৈরি করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নির্বাচন এখনো অনেক দেরি, কারণ আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হবে না।'

'এটা এসপিদের নিয়মিত বদলি,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

12h ago