ওয়াসার পানির শুল্ক নির্ধারণের ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট, পারফরম্যান্স বোনাসে নিষেধাজ্ঞা

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পানির শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।
ওয়াসা

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পানির শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া ওয়াসা আইনের ২১ ও ২২ ধারা লঙ্ঘন করে কোনো বিধি প্রণয়ন না করে কেন পানির শুল্ক নির্ধারণ করা হলো, সরকার ও ঢাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা ব্যাখ্যা করতে একটি রুল জারি করেছেন আদালত।

রুলে ওয়াসার কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তার কারণও ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া ওয়াসার কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়ার ওপর ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল ও নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা ওয়াসার বোর্ড, বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অডিটর অ্যান্ড কম্পট্রোলার জেনারেলকে (সিএজি) রুলের বিবাদী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ওয়াসা পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়া ও শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট আবেদন করেন।

আজ রিট আবেদনের শুনানির সময় আবেদনকারীর আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্ট বেঞ্চকে বলেন, ঢাকা ওয়াসা আইন ১৯৯৬ এর ২১ ধারা অনুযায়ী ওয়াসা বোর্ড, চেয়ারম্যান ও এমডির প্রণীত বিধি অনুযায়ী পানির শুল্ক নির্ধারণ করার কথা।

কিন্তু এখন পর্যন্ত বিবাদী এলজিআরডি সচিব কোনো বিধি প্রণয়ন করেননি। বিধি না থাকায় ঢাকা ওয়াসার বোর্ড, চেয়ারম্যান ও এমডি যথেচ্ছভাবে পানির শুল্ক নির্ধারণ করে ভোক্তাদের বিপদে ফেলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'ওয়াসা আইন জারির পর কোনো বিধি ছাড়া পানির শুল্ক নির্ধারণ অবৈধ এবং এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'আইনের ৪৭ ধারার বিধান অনুযায়ী ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান বা অন্য কোনো সদস্য, এমডি, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বা কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো কর্মকর্তা বা উপদেষ্টা বা কর্মচারী সরকারি কর্মচারী হিসেবে গণ্য হবেন। তাই, ঢাকা ওয়াসার বোর্ড, চেয়ারম্যান এবং এমডি ওয়াসাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করে তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দিতে পারেন না।'

'ঢাকা ওয়াসার এমডি ব্যক্তিগত লাভের জন্য পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়ার এই করপোরেট প্রথা চালু করেছেন, যা ঢাকা ওয়াসা আইনের পরিপন্থী,' বলেন তিনি।

Comments