‘প্রধানমন্ত্রী টিভিতে ঘোষণা দিলে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াব’

চা-শ্রমিক
ছবি: স্টার

'আমরা তাদের নেতা বানিয়েছি। তারা যদি আমাদের সমস্যা না বোঝেন তাহলে তাদের নেতা থাকার দরকার নেই। আমাদের মাঠে নামিয়ে তারা উধাও হয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী টিভিতে এসে ৩০০ টাকা মজুরি হবে—এই ঘোষণা দিলে আমরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াব। নয়ত আমাদের আন্দোলন চলবে।'

দ্য ডেইলি স্টারকে কথাগুলো বলছিলেন কালিঘাট পঞ্চায়েত সভাপতি অবাং তাতি।

এ ছাড়াও, আলীনগর চা-বাগানের নারী নেত্রী গৌরী রানী কৈরি, দয়াশংকর কৈরী, ইউপি সদস্য কিরন বৈদ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নেতারা তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই নিজেরা সমঝোতা করে আসছেন। তা মেনে নেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করলে তা মেনে নেওয়া হবে।

চা-শ্রমিক
ছবি: স্টার

গত ২২ আগস্ট ভোররাতে জেলা চা-শ্রমিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। বৈঠকের পর এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ বৈঠকে আমাদের কোনো লাভ হয়নি। লাভ হয়েছে কিছু শ্রমিক নেতার। দেশের মানুষ এই আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছে। এগিয়ে যাওয়ার সাহস দিচ্ছে। অথচ নেতারা শ্রমিকের স্বার্থবিরোধী কাজ করলেন।'

'করোনাকালে ঝুঁকি নিয়েও সারাক্ষণ চা-বাগানে কাজ করেছি' উল্লেখ করে শমশেরনগর চা-বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ছাড়াও, মজুরি বাড়ানোর চুক্তির মেয়াদ ১৯ মাস কেটে গেছে। এই মজুরি পাওয়ার পর কারেন্ট বিল, অনুষ্ঠান চাঁদা, ইউনিয়ন চাঁদা এসব কেটে নেওয়ার পর সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা থাকে। এ দিয়ে এক বেলা খাবার চালানো দায়।'

চা-শ্রমিক
ছবি: স্টার

এ দিকে, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, গতকাল সোমবার সকালে তাকে মারধর করেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা ভ্যালির কালিঘাট চা-বাগানের শ্রমিকরা।

আরও জানা গেছে, সেদিন সকালে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পঙ্কজ কন্দ কালিঘাট চা-বাগানে শ্রমিকদের আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানাতে আসেন। সেসময় শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করেন। পাশাপাশি, চা-বাগানের ট্রাক আটকে দেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে পঙ্কজ কন্দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পালকেও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির সেক্রেটারি নির্মল দাশ পাইনকারের বাড়ি ঘেরাওয়ের কথা জানা গেছে।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতিদের একজন জেসমিন আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুনেছি পঙ্কজ দাদাকে মারধর করা হয়েছে। শুধু তাকে নয়, বিভিন্ন জায়গায় যারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগ দিতে বলছেন তাদের ধাওয়া দেওয়া হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। আমরা বের হলেই মার খাওয়ার আশঙ্কা আছে।'

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা চা-শ্রমিকদের যৌক্তিক আন্দোলন। এখন যারা আন্দোলনে আছেন তাদের অনুরোধ করব তারা যেন রাস্তা অবরোধ বা বিশৃঙ্খলা না করেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

2h ago