ঋণ নিয়ে ভারত থেকে যেসব প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে চায় বাংলাদেশ

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ডিফেন্স লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) বাস্তবায়নে কিছুটা অগ্রগতি হওয়ায় বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারতকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের তালিকা দিয়েছে।
মঙ্গলবার হায়দ্রাবাদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক। ছবি: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচির টুইটার থেকে নেওয়া

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ডিফেন্স লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) বাস্তবায়নে কিছুটা অগ্রগতি হওয়ায় বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারতকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের তালিকা দিয়েছে।

তালিকায় থাকা সরঞ্জামগুলো বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ভারতের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে আগ্রহী।

গত মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

ভারতের সরকারি একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছে, '২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ নিজেদের সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করছে। নতুন অস্ত্র যোগ করছে ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে। এসব প্রয়োজনীয়তার উল্লেখযোগ্য অংশ পূরণের সক্ষমতা রয়েছে ভারতের, যা প্রতিবেশী ২ দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকেও বাড়িয়ে তুলবে।'

২০১৮ সালে বর্ধিত এলওসি ২০২৯ সালের এপ্রিলের মধ্যে ব্যবহারের কথা বলা হয়। অগ্রগতি ধীর হলেও বেশ কয়েক ধরনের সরঞ্জাম বিবেচনার বিভিন্ন পর্যায়ে আছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

বাংলাদেশের তালিকার বিষয়ে সূত্রটি বলেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত এলওসির অধীনে ৩টি জিনিস কেনার অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো হলো: প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার খরচে ৫টি ব্রিজ লেয়ার ট্যাঙ্ক (বিএলটি-৭২), প্রায় ২ দশমিক ২ মিলিয়ন খরচে ৭টি পোর্টেবল স্টিল ব্রিজ (বেইলি) ও টাটা গ্রুপ থেকে ২ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার খরচে ১১টি মাইন প্রোটেক্টিভ যানবাহন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কেনার জন্য প্রস্তাবিত অন্যান্য সরঞ্জামগুলোর মধ্যে রয়েছে মাহিন্দ্রা এক্সইউভি ৫০০ অফ-রোড যানবাহন, বুলেট প্রুফ হেলমেট, ৪ কোটি রূপি মূল্যের ২ ধরনের বিস্ফোরক, প্রায় ৩ কোটি রূপি মূল্যের ২১ ধরনের কাঁচামাল, প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ রূপি মূল্যের ১০ ধরনের সরঞ্জামসহ আরও কিছু সরঞ্জাম।

এ ছাড়া, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি ফ্লোটিং ডক, লজিস্টিক জাহাজ ও তেলের ট্যাঙ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামের নাম তালিকায় আছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ভারত বাংলাদেশকে আর্টিলারি গান, মর্টার, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র, ইলেকট্রনিক ও প্রকৌশল সরঞ্জাম, রাডার, হেলিকপ্টার, সামরিক রেক, জাহাজ নির্মাণ পরিষেবা ইত্যাদি দিতে আগ্রহী।

দ্বিতীয় একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, অন্যান্য সহায়তার মধ্যে বাংলাদেশকে সমুদ্র ও বিমানবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।

প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যেখানে ভারতের দক্ষতা আছে, সেখানে বাংলাদেশকে সহযোগিতার অনেক সুযোগ আছে উল্লেখ করে সূত্রটি বলেছে—এর মধ্যে আছে তথ্য প্রযুক্তি, সাইবার স্পেস, স্যাটেলাইট ও মহাকাশ প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে 'ডিফেন্স লাইন অব ক্রেডিট' কার্যকর করতে প্রতিবেশী ২ দেশ চুক্তি সই করেছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব বিনয় মোহন কাত্রা।

প্রায় ৫ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় এই ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় নয়াদিল্লি।

গত মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব বিনয় মোহন কাত্রা সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রতিরক্ষা এলওসির (লাইন অব ক্রেডিট) অধীনে প্রথম চুক্তিটি এই সপ্তাহের শুরুতে সই হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, আপনারা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম উদ্যোগ।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রতিরক্ষা এলওসি হলেও এটি উন্নয়ন অংশীদারত্ব কাঠামোর অংশ। নিরাপত্তা ও কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago