বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি, কনটেইনারবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ

অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম থেকে কনটেইনারবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। আজ বুধবার সকাল থেকে কোনো কনটেইনারবাহী ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়নি।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম থেকে কনটেইনারবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। আজ বুধবার সকাল থেকে কোনো কনটেইনারবাহী ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়নি।

চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডের (সিজিপিওয়াই) প্রধান ইয়ার্ড মাস্টার আবদুল মালেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় অন্তত ২০০টি কনটেইনার জমে গেছে। পাশাপাশি গম ও তেলবাহী ট্রেনও বন্ধ আছে।'

তিনি জানান, সিজিপিওয়াইয়ে ৪০ জন অস্থায়ী শ্রমিক কর্মরত আছেন। গত ৩ মাস ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে আগামীকালও (বৃহস্পতিবার) কনটেইনারবাহী ট্রেন চালানো সম্ভব হবে না।

জানা গেছে, রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে ১২০ জন অস্থায়ী কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে পয়েন্টসম্যানের সংখ্যা বেশি। অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে গেটম্যানও আছেন।

আন্দোলনকারীদের একজন অস্থায়ী পয়েন্টসম্যান মোহাম্মদ রোমান বলেন, 'পেটের দায়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা ৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। অথচ কাজ করছি। রেলওয়ে আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে। এর প্রতিবাদে আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা কাজ বন্ধ রাখব।'

এর আগে অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন অস্থায়ী শ্রমিকরা। পরে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকেও স্মারকলিপি দেন তারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, রেলওয়ের জনবল সংকটের কারণে শূন্য পদের বিপরীতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে তারা নিয়োগ পেয়েছেন। অস্থায়ী শ্রমিকরা রোদ-বৃষ্টি ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২৫–২৬ বছর বয়সে তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ৩ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন পদে অস্থায়ীভিত্তিতে কাজ করছেন। অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরে গেটকিপার, ওয়েম্যান, খালাসি, পি-ম্যান, অফিস সহকারী, ক্যারেজ খালাসি, বেয়ারা ও পোর্টার পদে নিয়োজিত আছেন। তাদের এখন যে বয়স, তাতে অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।

জানা গেছে, রেলওয়েতে বর্তমানে ৬ হাজার ৭২৯ জন অস্থায়ী শ্রমিক আছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়মিত শ্রমিক (টিএলআর) ঐক্য ফোরামের সমন্বয়ক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, 'আশ্বাস দেওয়ার পরেও অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করা হয়নি। ফলে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।'

ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, কনটেইনারবাহী ট্রেনের যাত্রা বাতিলের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলপথগামী কনটেইনারের জটের আশঙ্কা তৈরি হবে। ফলে ঢাকা আইসিডি থেকে আমদানিকারকরা সময় মতো পণ্য ডেলিভারি নিতে পারবে না।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Comments