একটি সেতুর জন্য হাহাকার

সরিষাবাড়ী সেতু
সরিষাবাড়ীর সাতপোয়া ইউনিয়নে শিশুয়া নদী পারাপারে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহান স্থানীয়রা। ছবি: স্টার

জামালপুরের সরিষাবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি। কাজীপুরের ৪ ইউনিয়নের মানুষ ভৌগলিক নৈকট্যের কারণে প্রতিদিনকার প্রয়োজনে সরিষাবাড়ী আসেন। এ ছাড়াও, সরিষাবাড়ীর সাতপোয়া ইউনিয়নের ৪ গ্রামের মানুষকে উপজেলা সদরে আসতে হয়। কিন্তু, শিশুয়া নদীর কারণে প্রতিদিনই তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সাতপোয়া ইউনিয়নের ৪ গ্রামসহ কাজীপুরের ৪ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ নৌকায় পার হয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, উপজেলা সদর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন, ব্যাংক, বাজার, সরকারি ও বেসরকারি অফিসে যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী পারাপারের জন্য একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা। সেটির জন্য ২ পারের যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়। সেই নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাও পার করা হয়।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শ্যালো নৌকায় শিশুয়া নদী পার হতে সাধারণত ৫ মিনিট লাগে। তবে বর্ষায় সময় দ্বিগুণ হয়। সেসময় ২ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা থাকে।

কাজীপুরের মনসুরনগর ইউনিয়নের শালগ্রাম চরের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সাহের উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাত্রী নিয়ে নদী পার হতে কখনো ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করি।'

কাজীপুরের পূর্বাংশে অনার্স কলেজ, ভালো প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়মিত নদী পার হয়ে সরিষাবাড়ী আসতে হয়।

কাজীপুরের মনসুরনগর ইউনিয়নের এম মনসুর আলী জাতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধানশিক্ষক কামরুল হাসান গোলজার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রমত্তা যমুনার কারণে আমরা কাজীপুর উপজেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন। নিত্য প্রয়োজনে সব সময় সরিষাবাড়ীতেই যাই। সেতু না থাকায় অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।'

চর সরিষাবাড়ী গ্রামের কৃষক রমজান আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষায় নদী স্বাভাবিকভাবেই প্রশস্ত হয়। প্রবল স্রোত থাকে। নদী পারাপারে সময়মতো নৌকা পাওয়া যায় না।'

সরিষাবাড়ী কলেজের শিক্ষার্থী শাকিল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষায় নদী পারাপারে বেশি সময় লাগে। রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। খেয়া না পেলে ক্লাসে পৌঁছতে দেরি হয়।'

সাতপোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলাকার কৃষকদের জমি চাষ করতে ঘনঘন নদী পারাপার হতে হয়। বর্ষায় তারা অনেক সমস্যায় পড়েন। এই নদীর ওপর সেতু হলে এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ভালো যোগাযোগের সুযোগ পাবেন।'

সরিষাবাড়ী উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'এই নদীর ওপর সেতু খুবই প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP won’t tolerate extortionists, land grabbers: Rizvi

Attempts are being made to create chaos in the society in the name of "mob culture", says the BNP leader

38m ago