রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ডেঙ্গু আতঙ্ক

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক মাসে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি প্রায় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 
নির্মাণাধীন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। স্টার ফাইল ফটো

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক মাসে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি প্রায় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 

এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাকিবুল নামে এক শ্রমিক এবং ২৯ সেপ্টেম্বর রাব্বি সর্দার নামে আরেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। 

তবে প্রকল্প এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে ডেঙ্গুর লার্ভা খুঁজে পায়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। 

আকস্মিক ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় প্রকল্প এলাকায় নেওয়া হয়েছে জিবাণুনাশক ছিটানোসহ নানা কর্মসূচি। তবে কাটেনি ডেঙ্গু আতঙ্ক।
 

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খান এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রায় ৯০ শতাংশই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক। 

গত এক মাসে প্রায় শতাধিক ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যার বেশিরভাগই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মচারী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাইট অফিস ইন-চার্জ রুহুল কুদ্দুস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শুধু প্রকল্পের সাধারণ শ্রমিকরাই নয় বরং প্রকল্পের কর্মরত অনেক বিদেশিরাও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত বিদেশি শ্রমিকদের প্রকল্পের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

বর্তমানে প্রকল্পের প্রায় ৩০ জন দেশি-বিদেশি কর্মী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।  

এদিকে রূপপুর প্রকল্পের শ্রমিকদের মধ্যে আকস্মিক ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ প্রকল্প এলাকা থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করেছে। তবে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া যায়নি বলে জানান, ঈশ্বরদীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খান। প্রকল্প এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করা তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, রূপপুর প্রকল্পের সাইট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পে কর্মরত সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোথাও কোনো পানি জমে না থাকে। 

এ ছাড়া প্রকল্পের ভেতরে নিয়মিত জিবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে, যাতে কোনো লার্ভা বাড়তে না পারে। সম্পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করে স্বাস্থ্য বিধি মেনেই কাজ করছে প্রকল্পের শ্রমিকরা। 

করোনা মহামারির সময়েও রূপপুর প্রকল্পে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ পরিচালনা করায় কাজের কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হলেও প্রকল্পের মূল কাজে বিঘ্ন ঘটছে না বলে জানান তিনি।

 

Comments