বাংলাদেশ পারে, এটাই আজ প্রমাণিত সত্য: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পারে, এটাই আজ প্রমাণিত সত্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতি হিসেবে আমরা সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। সেই নীতি মেনেই আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এই নীতিমালা মেনে চলি। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি সংঘাত নয়, সমঝোতা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়। আমাদের লক্ষ্য শান্তি বজায় রাখা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।'

'যেকোনো যুদ্ধ যে মানব জাতির জন্য কী ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা তা নিজেরা দেখেছি। আর বর্তমানে চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা অবলোকন করতে পারেন, অনুভব করতে পারেন। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আন্তর্জাতিক মহলেও সকলকে এই আহ্বান জানিয়েছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে', বলেন তিনি।

প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে যে বিরোধ ছিল, তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই সমাধান করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা নিয়ে সমস্যা ছিল, সেটাও সমাধান করেছি। এখানে উল্লেখ করেতে চাই, আমাদের সমুদ্রসীমা আইন ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব করে গিয়েছিলেন। জাতিসংঘ করেছে তার অনেক পরে। আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা প্রথম এই ক্লজে সই করি। আর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই সমুদ্র সীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।'

ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'একটি দেশ আরেকটি দেশের সঙ্গে এতটা শান্তিপূর্ণভাবে ভূমি বিনিময় করতে পারে, তার একটি বিরল দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।'

'শান্তি আমাদের সমৃদ্ধি এনে দেয়। সমসাময়িক সময়ে ভারতীয় মহাসাগরের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই এই সমুদ্র পথে চলে। অবাধ বৈশ্বিক বাণিজ্যের স্বার্থেই সমুদ্রকে নিরাপদ রাখতে হবে, চলাচল নিরাপদ রাখতে হবে', বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'কক্সবাজারে আমরা ইতোমধ্যেই একটি সমুদ্র গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন করেছি। আমদের সরকার সমুদ্র সম্পদের অপার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে বাংলাদেশের সামুদ্রিকখাতের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। তবে, সমৃদ্ধ অর্থনীতি কেবল তখনই সম্ভব, যখন আমরা সমুদ্রে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষে আমরা সমুদ্র রক্ষায় পরিকল্পিত সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সময়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের নৌবাহিনীকে আধুনিকায়ন করছি।'

তিনি বলেন, 'ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড হরাইজন' এই উপজীব্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত আইএফআর ২০২২ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যা সব সামুদ্রিক দেশের মধ্যে পরস্পর আস্থা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনার দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমি আশা করি আইএফআর ২০২২ এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সমুদ্র ও সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা এবং পর্যটন সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।'

'বাংলাদেশ পারে, এটাই আজ প্রমাণিত সত্য। আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ ২০২২ এর মূল প্রতিপাদ্যের প্রকৃত অর্থকে প্রতিফলিত করে নীল সমুদ্রে আবদ্ধ জাতিগুলো পরস্পরের কল্যাণে কাজ করবে, এটাই আমি প্রত্যাশা করি। আশা করি, আমাদের সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের পেশাদার প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে', যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English
road accidents death in Bangladesh April

Road accidents killed 583 in April: Jatri Kalyan Samity

Bangladesh Jatri Kalyan Samity (BJKS), a passenger welfare platform, said that a total of 583 people were killed and 1,202 injured in 567 road accidents across the country in the month of April, citing media reports

4h ago